২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিকভাবে গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতিদানের লক্ষ্যে ও ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে তিন দিনব্যাপী ‘মুক্তির সংগ্রাম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান-২০১৯’।
‘মুক্তির আলোয় আলোকিত করি ভুবন’ স্লোগানকে ধারণ করে টানা তৃতীয়বারের মতো এ আয়োজন করতে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রের আয়োজনে ২৫ মার্চ সকালে অনুষ্ঠান শুরু হয়ে চলবে ২৭ মার্চ সন্ধ্যা পর্যন্ত।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ার শিক্ষক লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক বশির আহমেদ।
তিনি জানান, ‘জীবন ও সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ছড়িয়ে দেওয়া। ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস পালন ও আন্তর্জাতিকভাবে গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি আদায় করার লক্ষ্যে এবং ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।’
২৫ মার্চ সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া চত্বরে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম। এছাড়াও অনুষ্ঠানে দেশ বরেন্য ব্যক্তি ও মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সাহসী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হবে।
উৎসবের অন্যান্য দিনের কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মাননীয় মন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপ-মন্ত্রী জনাব এ. কে. এম এনামুল হক শামীম, এম.পি, বীকন ফার্মাসিউটিক্যাল লিঃ ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব এবাদুল করিম বুলবুল এম. পি, জনাব নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন এম.পি।
এছাড়া সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী জনাব ফকির আলমগীর, লে. কর্নেল. (অব.) সাজ্জাদ আলী জহির বীর প্রতীক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফোরকান বেগম, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাখমুদা নারগিস রত্না, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. লায়লা পারভীন বানু, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক জনাব মাজহারুল ইসলাম ও জনাব আশরাফুল আলম প্রমুখ।
তিনদিন ব্যাপী অনুষ্ঠান সূচিতে থাকছে ২৫ মার্চ মুক্তিসংগ্রাম আর্ট ক্যাম্প ও স্থির চিত্র প্রদর্শনী, মুক্তির সংগ্রাম চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, আলোচনা ও সম্মাননা স্মারক প্রদান এবং মুক্তিসংগ্রামের গান ও কবিতা। ২৬ মার্চ অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিন থাকছে মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু বিষয়ক শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, মুক্তির সংগ্রাম চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, আলোচনা ও সম্মাননা স্মারক প্রদান এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এছাড়া অনুষ্ঠানের শেষ দিন ২৭ মার্চ থাকছে আলোচনা অনুষ্ঠান ও সম্মাননা স্মারক প্রদান, ‘নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ’ চলচ্চিত্র প্রদর্শন এবং সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে ‘একজন জয়নব বিবি ও ভ্রান্তিকাল’ নাটক প্রদর্শন।’
২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিকভাবে গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতিদানের লক্ষ্যে এবং ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে ২০১৭ সাল থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় পালন করে আসছে মুক্তিসংগ্রাম সাংস্কৃতিক উৎসব। জীবন ও সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের মাঝে মহান মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক চেতনা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে আয়োজনের লক্ষ্য।
২০১৭ সালে গৃহীত রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক ২৫ মার্চকে যথাযোগ্য মর্যাদায় ‘জাতীয় গণহত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করা হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে দেশে একমাত্র জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ই এ ধরনের তিন দিনব্যাপী ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজন হাতে নিয়েছে। আয়োজকদের প্রত্যাশা, ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনে জাতিসংঘের স্বীকৃতি আদায়ের প্রক্রিয়ায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক নেয়া এই পদক্ষেপ তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।