স্বাধীনতার ৪৬ বছরে এসে গত বছর প্রথমবারের মতো জাতীয়ভাবে ‘গণহত্যা দিবস’ পালন করে বাংলাদেশ। এর ধারাবাহিকতায় চলতি বছর দ্বিতীয় বারের মতো জাতীয় পর্যায়ে দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হবে। আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, অনেক পরে হলেও গণহত্যার জাতীয় স্বীকৃতি মিলেছে, এখন দিনটির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দরকার। একইসঙ্গে দিবসটিতে দেশের অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বিএনপির চুপ থাকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলে: বরাবরই গণহত্যা দিবসে চুপ থেকেছে বিএনপি। জাতীয় পর্যায়ে গণহত্যা দিবস পালিত হলেও তারা গতবছর কোন কর্মসূচি দেয়নি। কারণ, এতে তাদের পাকিস্তানী বন্ধুরা অখুশি হতে পারে। আমরা যখন গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি চাচ্ছি তখন তারা পাকিস্তানীদের খুশি করতে ব্যস্ত।
এ বছরও গণহত্যা দিবসে কোনো কর্মসূচি নেই বিএনপির। তারা গণহত্যা দিবসকে বাদ রেখে ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয় মন্ত্রী আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক গণহত্যা দিবসের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবি জানিয়ে বলেছেন: বিশ্বজুড়ে ৯ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস পালন করা হয়। কিন্তু ৯ ডিসেম্বরের পেছনে কোনো ইতিহাস নেই। আমাদের ২৫ মার্চ কালো রাত্রির পেছনে অনেক ইতিহাস আছে। আমরা চাই বাংলাদেশে পাকিস্তানী বাহিনীর চালানো নির্মম গণহত্যাও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাক। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ের জন্য কাজ করে যাচ্ছে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল হানিফ বলেন: ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিকভাবে গণহত্যা দিবস পালনে আমরা দাবি করে আসছি। এক লাখ লোকের গণহত্যাও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। কিন্তু, আমাদের দেশে লাখ লাখ মানুষকে হত্যা করা হলো, কিন্তু আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেলো না!
‘এর পেছনে অবশ্য কারণও আছে। ১৯৭১ সালে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক অবস্থা চিন্তা করলে দেখা যায়, আমাদের পক্ষের তুলনায় বিপক্ষ গ্রুপ অনেক শক্তিশালী ছিলো। বিশ্বের নীতি নির্ধারকও ছিলো তারা। তাদের কারণেই হয়তো তখন স্বীকৃতি আদায় করা সম্ভব হয়নি। তবে এখন সরকারের পক্ষ থেকে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের জোর কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালানো হবে’, বলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী।
২৫ মার্চ মধ্যরাতে অপারেশন সার্চলাইট’-এর নামে বাঙালির ওপর ঝাপিয়ে পড়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। এর পরিপ্রেক্ষিতে মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসে তারা ৩০ লাখ বাঙালিকে হত্যা করে।