বর্তমান সরকারকে গণবিরোধী আখ্যা দিয়ে তাদের কাছ থেকে জনকল্যাণমূলক বাজেট আশা করা যায় না বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি।
মঙ্গলবার দুপুরে নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলটির মুখপাত্র ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, গণবিরোধী সরকারের কাছ থেকে জনকল্যাণমুখী বাজেট প্রত্যাশা কেউ করতে পারে না। এরা গণবিরোধী সরকার, জনসম্পৃক্ত ও জনকল্যাণমূলক বাজেট দেবে- এটার কোনো কারণ নেই। তারপরেও দেখি আমরা। আগে বাজেট উপস্থাপন হোক। বাজেটের আদি অন্ত বিশ্লেষণ করে, তার ওপর ভিত্তি করে আমরা প্রতিক্রিয়া জানাবো।
গত ১০ বছরে দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়েনি- অর্থমন্ত্রীর এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে রুহুল কবির রিজভী বলেন, রবী ঠাকুরের ওই গানটা নিশ্চয়ই সবার মনে আছে- কেউ কখনো খুঁজে কি পায় স্বপ্নালোকের চাবি। এই স্বপ্নালোকের চাবি আছে অর্থমন্ত্রীর কাছে। তাই এই ধরণের উদ্ভট কথাবার্তা বলেন আর কী।
রিজভী বলেন, সারাদেশের সড়ক-মহাসড়ক এখন ছোট ছোট খালে পরিণত হয়েছে। বর্তমান সরকারের উন্নয়ন শুধু সাইনবোর্ড ও বিলবোর্ডে শোভা পায়। দেশের সড়ক-মহাসড়ক ও গ্রামীণ সড়ক মিলে ৮৫ হাজার কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশা বিরাজ করছে। সড়কের খানাখন্দ ও আর দুর্ভোগের আশংকায় লাখ লাখ মানুষ ঈদে বাড়ি যেতে পারবে কিনা তারা চিন্তিত হয়ে পড়েছে। তারা বিকল্পভাবে বাড়ি যেতে ট্রেনের টিকিটের পিছনে ছুটছে, সেখানেও পাচ্ছে না কাঙ্খিত টিকেট। সরকারের বেপরোয়া লুটপাটের নীতির কারণেই সড়ক-মহাসড়কের দুর্দশা কাটছে না, ঈদের সময় ঘরে ফিরতে চরম দুর্গতির জন্য এই সরকারের প্রতি আমরা ধিক্কার জানাই যে, মানুষকে ন্যুনতম কোনো সেবা তারা দিতে পারে না।
তিনি আরো বলেন, দেশ অগ্রগতির দিকে নয়, অন্ধকারের অতলে তলিয়ে যাচ্ছে। অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য বাংলাদেশের জনগনের সঙ্গে একেবারেই ডাহা তামাশা এবং মস্করা। দেশ যে পেছনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে সেটা জনগণ জানে। নিশ্চয় অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী সেটা বলবেন না। আর গণতন্ত্রের কথা বলেছেন। গণতন্ত্র এখন ক্রসফয়ারতন্ত্রের বেড়াজালে আবদ্ধ।
পশ্চিবঙ্গের আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী প্রতিদান চেয়েছেন’ শীর্ষক সংবাদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘ভারতের পত্রিকায় যে প্রতিদানের কথা বলা হয়েছে তা বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে প্রভাব খাটানোর ইঙ্গিত। এ বিষয়টি আমাদের সবাইকে চিন্তা করতে হবে।
এসময় রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ আবারও একটি ভোটারবিহীন নির্বাচন ও ভোট ডাকাতির নির্বাচনের ষড়যন্ত্র করছে। সেজন্যই দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী, তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা সাজানো মামলায় আটকে রেখেছে। কিন্তু শেখ হাসিনার সে ইচ্ছা পূরণ হবে না। মানুষ তাদের ভোটের অধিকার ফিরে পেতে বদ্ধপরিকর। কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমেই গণতন্ত্র মুক্তি পাবে, গনতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে আর তা হবে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বেই।
সংবাদ সম্মেলনে দলের ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, শওকত মাহমুদ, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবুল খায়ের ভুঁইয়া, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরফত আলী সপু, বেলাল আহমেদ প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।