প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র কাঠামোয় গণতন্ত্র ও সংবাদ মাধ্যম পরস্পর হাত ধরাধরি করে চলতে হয়।
সাংবাদিক মেহেদী হাসান ডালিমের ‘আইনে তারুণ্য’ নামক সংকলন গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি একথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘সাংবাদিকতা একটি মহান পেশা এবং গুরুত্বপূর্ণ কাজ। সমাজের অসঙ্গতি দূরীকরণে এবং সুন্দর সমাজ বিনির্মাণে সাংবাদিকতা তথা গণমাধ্যমের ভূমিকা অনস্বীকার্য। মানুষের জানার অধিকার এবং গণমাধ্যমের তথ্য জানানোর গভীর দায়বদ্ধতার প্রশ্নে সামাজিক অঙ্গীকার নিয়ে সাংবাদিকরা প্রতিনিয়ত কাজ করছেন।’
প্রধান বিচারপতি আরো বলেন, ‘একটি গণতান্ত্রিক, স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশে সংবাদ মাধ্যমের অনুপস্থিতির কথা ভাবাই যায় না। কেননা, একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র কাঠামোয় গণতন্ত্র ও সংবাদ মাধ্যম পরস্পর হাত ধরাধরি করে চলতে হয়। সঙ্গত কারণেই সাংবাদিকতাকে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে মূল্যায়ন করা হয়।’
প্রধান বিচারপতি তার বক্তব্যে বলেন ‘একজন আদর্শ মানুষের সাধারণ গুণ ও যোগ্যতার পাশাপাশি একজন আদর্শ সাংবাদিকের দরকার বিশেষ মাত্রার আরো কিছু প্রজ্ঞা, দক্ষতা ও গুণাবলি। একজন দক্ষ সাংবাদিক একটি সংবাদ ঘটনার বয়ানকারি এবং একজন দক্ষ যোগাযোগকারী। সমাজ সভ্যতার অগ্রগতিতে, জাতীয় জীবনের কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জনে, মানবতা ও বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং মানবাধিকার সুরক্ষার শাণিত চেতনা একজন আদর্শ সাংবাদিকদের জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ। আইন-আদালত, আইন শৃঙ্খলা, মানবাধিকার এবং আইনি সেবা সংক্রান্ত তথ্য আইন সাংবাদিকতার মাধ্যমে উঠে আসে। সাংবাদিকরা সাধারণ জনগণ তথা বিচারপ্রার্থী জনগণের আশা-আকাঙ্খা, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি এবং লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে সংশ্লিষ্ট সকলকে সচেতন করার গুরু দায়িত্ব পালন করে। ফলে আইনাঙ্গনের সাথে সাংবাদিকতার সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিষ্ট। অনুসন্ধিৎসু সাংবাদিকতার মাধ্যমে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করে বিদ্যমান সমস্যা এবং সমাধানের পথ দেখিয়ে প্রতিটি উন্নয়নমূলক কাজে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে- এটাই সবার প্রত্যাশা। আমি বিশ্বাস করি সাংবাদিকগণ মহান মুক্তিযুদ্ধ ও দেশপ্রেমের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে দেশ ও জাতি গঠনে সচেষ্ট থাকবে।’
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন হাইকোর্টের বিচারপতি নাঈমা হায়দার, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সভাপতি এডভোকেট জয়নুল আবেদীন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু, ল’ রিপোটার্স ফোরামের সভাপতি সাঈদ আহমেদ খান, সাবেক সভাপতি এম বদিউজ্জামাল ও আশুতোষ সরকার। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হাইকোর্টের বিচারপতি, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ।