চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

গণতন্ত্রকে আরো দুর্বল করার নির্বাচন নাকি শক্তিশালী করার

গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় ৫ জানুয়ারিকে ‘গণতন্ত্র রক্ষা দিবস’, এবং ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ পালন করেছে দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি। তৎকালীন প্রেক্ষাপটে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা রক্ষা হয়েছে ঠিক। তবে, শক্তিশালী বিরোধীদল না থাকায় গণতন্ত্র চর্চায় ক্ষতিও হয়েছে। এই ক্ষতির প্রধান দায়ভার খালেদা জিয়ার। কারণ তিনি নির্বাচনে আসেননি। তবে, আগে যেহেতু তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ছিল এবং এদেশে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের অভিজ্ঞতা সুখকর নয় তাই তার শঙ্কার জায়গা একেবারে উড়িয়ে দেওয়ার মতো বিষয় ছিল না। তারপরও সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিল হয়ে যাওয়ায় শেখ হাসিনা সর্বদলীয় সরকারের ব্যবস্থা করেছিলেন। এমনকি ২০১৪ সালের নির্বাচনকে ঘিরে এর আগের বছর যখন বিএনপি লাগাতার হরতালসহ আন্দোলন করছিল, তখন রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনে খালেদা জিয়াকে টেলিফোন করে সংলাপের প্রস্তাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এমনকি সেসময় তিনি খালেদা জিয়াকে গণভবনে নৈশভোজের দাওয়াত দেন। কিন্তু খালেদা জিয়া শেষ পর্যন্ত সেই সংলাপে যাননি। বরং তার দল ও জামায়াতসহ জোট মানুষ পোড়ানোর রাজনীতি চালু রাখে। সেটা না করে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব গ্রহণ করে খালেদা জিয়া যদি তখন সংলাপে যেতেন, তাহলে হয়তো দেশের এই নির্বাচনী ইতিহাস অন্যরকম হতো। এখন এক বছরের কম সময়ের মধ্যে যে নির্বাচন, সেটা কি দলীয় সরকারের অধীনে হবে নাকি সর্বদলীয় তা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে নির্বাচনে না গিয়ে এভাবে ক্ষমতার বাইরে থাকার মতো ভুল বিএনপি আর করবে বলে আমরা মনে করি না। নির্বাচন বর্জন না করে গণতন্ত্রের স্বার্থে খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন বলেই আমরা মনে করি। তিনিও বলেছেন, বিএনপি আগামী নির্বাচনে যাবে। এক্ষেত্রে অবশ্য সকল পক্ষকেই দেশ ও গণতন্ত্রের স্বার্থ সবার উপরে রাখতে হবে। তবে নির্বাচনের সময় যে সরকারই থাকুক, নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রাণভোমরা নির্বাচন কমিশন। সেই কমিশন কতোটা ব্যক্তিত্বসম্পন্ন এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারবে তার উপরই নির্ভর করবে গণতন্ত্র আরো দুর্বল হবে নাকি আবার শক্তিশালী হবে। দেশের স্বার্থ বিবেচনায় নিয়ে নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে যথাযথ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে তা বাস্তবায়নে সচেষ্ট হবে বলে আমরা আশা করি।