আঙুলের ইনজুরির কারণে পুনর্বাসনে থাকা সাকিব আল হাসান ম্যাচ অনুশীলন না করেই উড়ে গেছেন শ্রীলঙ্কায়। স্বাগতিকদের বিপক্ষে শুক্রবারের বাঁচা-মরার ম্যাচেই নেমে যেতে পারেন। এ অলরাউন্ডার খেলতে পারা মানে বাংলাদেশ দলে ভারসাম্য ফেরা, শক্তি বেড়ে যাওয়া। ম্যাচটা জিতলে নিধাস ট্রফির ফাইনালে উঠে যাবে টাইগাররা। কিন্তু প্রশ্ন হল সাকিব ম্যাচ খেলার জন্য কতটা ফিট? কতটা সুবিধাজনক অবস্থায় আছেন?
সাকিবের সবশেষ ফিটনেস আপডেটের অবস্থা নিয়ে মন্তব্য করতে রাজী হননি বিসিবি চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী। বোর্ডের প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, টিম ম্যানেজমেন্টের চাওয়াতেই বৃহস্পতিবার সাকিবকে শ্রীলঙ্কা পাঠানো হয়েছে এবং আশা করা হচ্ছে শুক্রবারের ম্যাচেই নামবেন।
‘দল সাকিবকে আশা করছে। অনুরোধটা টিম ম্যানেজমেন্ট থেকেই এসেছে। আমরা সবদিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি তাকে পাঠানোর। এখন পরিস্থিতিই বলে দেবে সে খেলতে পারবে কিনা।’
বড় ধরনের ইনজুরিতে পড়া মানেই লম্বা পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাওয়া। সুস্থতার ছাড়পত্র পাওয়ার শেষ ধাপ ম্যাচ অনুশীলনের অনুমতি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেটির মঞ্চ ঘরোয়া লিগ। নিজেকে পুরোপুরি ফিট অবস্থায় এনে আন্তর্জাতিক ম্যাচে নামেন ক্রিকেটাররা। সাকিবের জন্য সেই প্রক্রিয়ার অংশ হতে পারত চলমান প্রিমিয়ার লিগ। কিন্তু তিনি সোজা চলে গেলেন শ্রীলঙ্কায়। তাতে প্রশ্ন উঠছে, ঝুঁকিটা একটু বেশিই নিয়ে ফেললেন কিনা!
যেখানে আঙুলের ব্যথা কমাতে মেলবোর্ন থেকে ইনজেকশন নিয়ে সাকিব দেশেই ফিরেছেন গত রোববার। সোমবার মিরপুরের ইনডোরে ব্যাটিং, বোলিং এবং ফিল্ডিংয়ের চেষ্টা করতে দেখা যায় তাকে। ওইদিন নেটে স্বাচ্ছন্দ্য নিয়েই ব্যাটিং করেছেন সাকিব। বল হাতে অবশ্য অতটা স্বাচ্ছন্দ্যে দেখা যায়নি বাঁহাতি স্পিনারকে। শুরুতে আস্তে ছুড়লেও পরে স্বাভাবিক গতিতে বল করার চেষ্টা করেন। বুধবার একাডেমি মাঠে করেন ক্যাচিং অনুশীলনও।
সাকিব শ্রীলঙ্কা গিয়ে খেলতে পারেন, হঠাত এই খবরে বিস্মিত হয়েছেন বিসিবিপাড়ার গণমাধ্যমকর্মীরাও। কেননা একদিন আগের অনুশীলন দেখে কারও মনে হয়নি সাকিব ম্যাচ খেলার অবস্থায় আছেন। অনুশীলনে চোখ রাখা সংবাদকর্মীরা মনে করছেন একটু বেশিই ঝুঁকি নিচ্ছে বিসিবি।
সাকিব দলকে প্রেরণা যোগাতে যাচ্ছেন নাকি খেলতে যাচ্ছেন, সেই প্রশ্ন ছিল বিসিবি নির্বাহীর কাছে। তিনি বলেন, ‘আমরা সাকিবের ব্যাপারে আগেই চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু তার ইনজুরিটা একটু সেনসেটিভ ছিল। এজন্য আমরা তাকে অস্ট্রেলিয়া পাঠাই। সেখানকার ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে সাকিব দেশে ফেরেন। আমরা তার জন্য যে অস্ট্রেলিয়ান ডাক্তারের পরামর্শ নিয়েছিলাম তার সঙ্গে যোগাযোগ আছে আমাদের মেডিক্যাল টিমের। সাকিব নিজে যদি ভাল অনুভব করে তাহলে খেলতে পারবে, এধরনের একটা পরামর্শও আছে।’
সাকিব ইনজুরিতে পড়েছিলেন গত ২৭ জানুয়ারি, ঘরের মাঠে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে। এরপর কেটে গেছে দেড় মাস। বাঁ-হাতের কনিষ্ঠ আঙুলে সেলাই পড়ে ১০টি। আঙুলের গোড়ালিও মচকে যায়। এরপর থেকেই চলছিল সেরে ওঠার লড়াই।