কু-ঋণ বা মন্দ মানের ঋণের বিপরীতে শতভাগ প্রভিশন রেখে সঙ্গে সঙ্গে অবলোপন করার সুপারিশ করেছে ব্যাংকের নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি)।
বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী খেলাপি হওয়ার পরেও তিন বছর অপেক্ষা করতে হয় অবলোপন করার জন্য। এই নীতিমালা থেকে অব্যাহতি চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে সুপারিশ করেছে এবিবি।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে বৈঠক করেছে এবিবি। ওই বৈঠক শেষে এসব তথ্য জানা গেছে।
বৈঠকে সভাপতিত্বে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। আরো উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি গভর্নর মনিরুজ্জামান, ব্যাংকিং রিচার্জ উপদেষ্টা এসকে সুর চৌধুরী এবং ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের একটি দল।
রাইট অফ বা অবলোপন করার মানে হলো, এই মন্দ ঋণগুলোকে ব্যাংকের মূল ব্যালান্সশিট থেকে সরিয়ে আলাদা আরেকটি লেজারে হিসাব সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, ঋণ পুনঃতফসিল, খেলাপি ঋণ অবলোপন, ইন্টারনাল ক্রেডিট রেটিংসহ (আইসিআরআর) বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন মাস শেষে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ১২ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা। এরমধ্যে কু-ঋণ বা মন্দমানের ঋণের পরিমাণ ৯৭ হাজার ৯৩৭ কোটি টাকা। যেকোনো সময় অবলোপনের সুযোগ পেলে কু-ঋণ এর পুরো অর্থ হিসাব থেকে বাদ দিতে পারবে ব্যাংকগুলো। অর্থাৎ নীতিমালা কার্যকর হলে খেলাপি ঋণ দাঁড়াতে পারে মাত্র ১৪ হাজার ৬৮৮ কোটি টাকা।
এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে ব্যাংকিং খাত আরো সঙ্কটে পড়তে পারে বলে মত বিশ্লেষকদের।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে সর্বপ্রথম অবলোপন নীতিমালা শিথিল করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ৫ বছরের পরিবর্তে ৩ বছরের অনাদায়ী খেলাপি ঋণ হিসাব থেকে বাদ দিতে পারছে ব্যাংকগুলো। আগে মামলা ছাড়া ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত অবলোপন করতে পারতো। কিন্তু এখন দুই লাখ টাকা পর্যন্ত খেলাপি ঋণ মামলা ছাড়াই অবলোপন করতে পারছে তারা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী জুন শেষে মোট অবলোপনকৃত ঋণের পরিমাণ ৪০ হাজার ৪২৬ কোটি টাকা।