সিলেট থেকে: টিকিট আছে। কিন্তু মাঠে ঢুকতে পারছেন না ১৫ হাজারেরও বেশি দর্শক। এই ১৫ হাজারসহ মাঠে উপস্থিত আরও ২৫ হাজার দর্শক এসেছিলেন একটাই উদ্দেশ্য নিয়ে। বাংলাদেশের জয় দেখতে। কিন্তু মাঠের খেলায় মন ভরলেও ফলাফল মুখ ভার করিয়েছে সমর্থকদের। দারুণ খেলেও ফিলিপিন্সের কাছে হেরে বসেছে জেমি ডের শিষ্যরা।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক গোল্ড কাপে গ্রুপ ‘বি’র শেষ ম্যাচে ফিলিপিন্সের কাছে ০-১ গোলে হেরেছে বাংলাদেশ। এই হারে গ্রুপ থেকে ৩ পয়েন্ট নিয়ে রানার্সআপ হয়েছে লাল-সবুজরা। এর আগে অবশ্য নিশ্চিত হয়েছে সেমিফাইনাল। ফাইনালে উঠতে হলে গ্রুপ ‘এ’র চ্যাম্পিয়ন দলকে হারাতে হবে জামাল ভুঁইয়াদের।
আগেরদিন মিলেছিল একাধিক পরিবর্তনের আভাস। খেলোয়াড়দের তালিকা হাতে পাওয়ার পর দেখা গেল সেই আভাসই সত্য। পাঁচ পরিবর্তন নিয়ে শুক্রবার ফিলিপিন্সের বিপক্ষে রণকৌশল সাজান লাল-সবুজ কোচ জেমি ডে। নিয়মিত অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়ার পরিবর্তে এদিন নেতৃত্ব সামলেছেন ডিফেন্ডার তপু বর্মণ।
তপুর নেতৃত্বে ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই এগিয়ে যাওয়ার দারুণ এক সুযোগ ছিল স্বাগতিকদের সামনে। ডিফেন্ডার রহমত মিয়ার ডি-বক্সের ভেতর করা থ্রো-ইন লাফিয়ে হেড করেছিলেন অধিনায়ক তপু। সেটি ঝাঁপিয়ে ফিস্ট করেন ফিলিপিনো গোলরক্ষক। ফিরতি বল নিজ দলের খেলোয়াড়ের মাথায় লেগে বার ছুঁলেও বল আর জালে জড়ায়নি।
একাধিক গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় না থাকলেও আক্রমণে বেশ ধারালো ছিলো বাংলাদেশ। ১৫তম মিনিটে আগের ম্যাচের নায়ক বিপলু আহমেদ বিপলু এ ম্যাচেও হতে পারতেন গোলদাতা। কিন্তু ডি-বক্সের বাইরে থেকে তার মাটি কামড়ানো শট ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক।
প্রথম ২০ মিনিট স্বাগতিকদের আক্রমণ কিছুটা ঝিমিয়ে থাকলেও হঠাৎ গা ঝাড়া দিয়ে গোল আদায় করে নেয় তারা। কাউন্টার অ্যাটাক থেকে বল পেয়ে ডি-বক্সের বামপ্রান্তে উঠে যান অধিনায়ক মিসাগ বাহাদুরাং। তার ক্রস পায়ে ঠেলে তপু ও গোলরক্ষক রানার শরীরের নিচ দিয়ে ২৪ মিনিটে জাল খুঁজে নেন মিডফিল্ডার মাইকেল ড্যানিয়েলস।
পিছিয়ে পড়ে বারবার গোলের হাতছানি পেয়েও ম্যাচে সমতা ফেরাতে পারেনি স্বাগতিকরা। ৩৮ মিনিটে কর্নারকিক থেকে নেয়া বাঁকানো শটে বল জালে ঢোকার মুখেই আটকে দেন ফিলিপিনো গোলরক্ষক মাইকেল ক্যাসাস।
বিরতি থেকে ফিরে আরেকটি গোলের সুযোগ নষ্ট হয় লাল-সবুজদের। ৪৬ মিনিটে টুটুল হোসেন বাদশার থ্রো-ইন ফিলিপিন্সের জালে জড়ানোর আগে লাফিয়ে ঠেকিয়ে দেন প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক।
গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ফিলিপিনো রক্ষণে আক্রমণের মাত্রা বাড়িয়ে কোনো ফল পায়নি বাংলাদেশ। ৬৯ মিনিটে সুপারম্যানের মতো লাফিয়ে হেড করেও বল লক্ষ্যে রাখতে পারেননি মিডফিল্ডার ইমন বাবু। দুই মিনিট পর তারই এক ভলি সীমানার বাইরে গেছে বারের ওপর দিয়ে।
ম্যাচের শেষ মিনিট আগেও গোল হাতছানি দিয়েছিল তপু বর্মণের দলকে। অতিরিক্ত সময়ে কর্নার হয়ে উড়ে আসা বল জটলার ভেতর থেকে দারুণভাবে হেড করেন তপু। কিন্তু এবারও তাকে নিরাশ করেন ওই গোলরক্ষক।
বল পায়ে গতি থাকলেও সেই পুরনো রোগ ‘ফিনিশিং দুর্বলতা’ ভুগিয়েছে বাংলাদেশকে। ছিল ভুল পাসের ছড়াছড়ি। এরিয়াল বলেও মুনশিয়ানার পরিচয় দিতে ব্যর্থ জেমি ডের শিষ্যরা। বল পায়ে প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে ঢুকেও সময় মতো শট কিংবা প্রয়োজনীয় সঙ্গীর অভাবে ম্যাচে আর ফেরা হয়নি স্বাগতিকদের।