খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটের আগের দিন কারচুপির শঙ্কার কথা জানিয়ে সরকারি দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে যেন অভিযোগের পাহাড় দাঁড় করালেন বিএনপির প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু।
তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেকের পাল্টা অভিযোগ, সুষ্ঠু নির্বাচনকে সহিংসতার পথে ঠেলে দিতে বিএনপি নির্বাচনী পরিবেশকে ভীতিকর করছে।
মঙ্গলবার খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ভোট দেবেন খুলনার ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৯৩ জন ভোটার।
মেয়র পদে পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে থেকে একজনকে বেছে নেবেন ভোটাররা।
এছাড়া ৩১ ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৪৮ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরের দশটি পদে ৩৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন।
দলীয় প্রতীকের এ নির্বাচনে মেয়র পদে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা তালুকদার খালেকের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ধানের শীষের প্রার্থী মঞ্জু বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক।
বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মোংলা) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে আসছেন খালেক, এবারও সংসদ সদস্য পদ ছেড়ে খুলনার মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সংসদ সদস্য পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে মেয়র নির্বাচনে দাঁড়ানো তালুকদার খালেককে বিজয়ী করতে খুলনাবাসী ভুল করবেন না বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
একই আশা প্রকাশ করে বিএনপি প্রার্থী বলেছেন, প্রশাসনের সহায়তায় নয়, জনগণের ভোটে খুলনায় বিজয় হবে ধানের শীষের।
মঙ্গলবারের নির্বাচন উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির প্রার্থীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না- এমন কোনো পরিস্থিতি খুলনায় এখনো সৃষ্টি হয়নি।
আব্দুল খালেক বলেন, বিএনপি’র পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে, তাদের নেতাকর্মীদের নির্বাচনী মাঠে থাকতে দেয়া হচ্ছে না। কিন্তু অভিযোগটি ভুল।
নির্বাচন কাভার করতে খুলনায় অবস্থানরত ঢাকা ও খুলনাসহ বিভিন্ন এলাকার গণমাধ্যমকর্মী সাংবাদিকদের খালেক অনুরোধ জানান মাঠ পর্যায়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে তার বক্তব্যের সত্যতা যাচাই করতে।
এর আগে সোমবারই সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপির মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুু অভিযোগ করেন, নির্বাচনে পুলিশ সরকারের পক্ষ হয়ে মাঠে নেমেছে। কিন্তু তারপরও ভোটের পরিবেশ যদি সুষ্ঠু হয় তবে ভোটারদের রায় মেনে নেবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন বর্জন করবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুু। বলেছেন, নির্বাচনী মাঠে থেকে শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবেন তিনি।
ইতোমধ্যে খুলনা নগরীর ভোটকেন্দ্রগুলোতে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ব্যালট বাক্সসহ অন্যান্য সরঞ্জাম পাঠানো শুরু হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাড়ে ৯ হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে পুরো শহর জুড়ে।
শহর জুড়ে নিরাপত্তা জোরদারের পাশাপাশি সোমবার রাত ১২টা থেকে মঙ্গলবার রাত ১২টা পর্যন্ত যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, খুলনা সিটি কর্পোরেশনের সাড়ে ৫ লাখ ভোটার যেন নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন, সেজন্য প্রয়োজনীয় সবরকম প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন নির্দেশনা দিয়েছে, কোনোভাবেই যেন সিটি নির্বাচন বিতর্কের মুখে না পড়ে এবং সংশ্লিষ্ট কেউ যেন পক্ষপাতমূলক আচরণে অভিযুক্ত না হয়।