বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার পরবর্তী শুনানি ১০ আগস্ট ধার্য করেছেন আদালত। দুর্নীতির দুই মামলায় হাজিরা দিতে সকালে বকশিবাজারের বিশেষ আদালতে যান বিএনপি চেয়ারপারসন। আদালতে আজ সোমবার মামলার বাদীকে জেরা করা হয়।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বাদী ও প্রথম সাক্ষী দুদকের উপপরিচালক হারুন-অর রশিদকে আজ তৃতীয় দিনের মতো খালেদা জিয়ার পক্ষে জেরা করেন তাঁর আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। এই জেরা আজ শেষ হয়েছে। সাক্ষীকে মামলার অপর দুই আসামির পক্ষে জেরা এখনো বাকি আছে।
জেরা শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা ২৬ আগস্ট বার কাউন্সিল নির্বাচন হওয়ায় ওই তারিখের পর মামলার পরবর্তী কার্যক্রমের দিন ধার্য করতে আবেদন করেন। এ সময় বিচারক বলেন, প্রধান বিচারপতি সব মামলা তড়াতাড়ি শেষ করতে বলেছে এবং জেরা শুরু হলে নিয়ম অনুযায়ী তা শেষ করতে হয়। আমি এক সপ্তাহ সময় দিতে পারি।
এদিন বিচারক মামলায় জেরার অংশ হবহু গণমাধ্যমে প্রকাশ না করার জন্য সাংবাদিকদের অনুরোধ করার পাশাপাশি সংবাদ প্রকাশে নৈতিকতা মানার কথা বলেন।খালেদার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব বলেন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলাসহ উপমহাদেশের বড় বড় গুরুত্বপূর্ণ মামলার কার্যক্রম হুবহু গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সুতরাং এ মামলার সংবাদ প্রকাশ করলে অসুবিধা কোথায়। স্বচ্ছতার জন্য সব সংবাদই প্রকাশ করা জরুরি।
এর বিরোধিতা করে করে বাদীপক্ষের আইনজীবী আগামীকাল মঙ্গলবার মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্যের আবেদন জানান।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে মামলার পরবর্তী কার্যক্রমের তারিখ ১০ আগস্ট ধার্য করেন আদালত।
বেগম খালেদা জিয়ার হাজিরাকে কেন্দ্র করে আদালত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।
এর আগে গত ২৩ জুলাই এই মামলার শুনানিতে খালেদা জিয়া উপস্থিত ছিলেন। ওই দিন বিচারক মামলার পরবর্তী শুনানি ৩ আগস্ট ধার্য করেন।
২০১০ সালের ৮ আগস্ট জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে অর্থ লেনদেনের অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ চারজনের নামে তেজগাঁও থানায় মামলা করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক হারুনুর রশীদ।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার আসামি মোট ছয়জন। খালেদা ছাড়া অন্য পাঁচজন হলেন, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদার বড় ছেলে তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান। আসামিদের মধ্যে ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক, বাকিরা জামিনে আছেন।
অন্যদিকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় মোট আসামি চারজন। খালেদা ছাড়া অভিযুক্ত অপর তিন আসামি হলেন, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।এর মধ্যে জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও মনিরুল ইসলাম খান জামিনে আছেন। হারিছ চৌধুরী মামলার শুরু থেকেই পলাতক।