জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতেও বিচার চলবে বলে জানিয়েছেন আদালত। পুরনো ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে স্থাপিত পঞ্চম বিশেষ জজ আদালত বৃহস্পতিবার এ আদেশ দিয়েছেন।
আদালত বলেছেন, সুষ্ঠুভাবে বিচার কাজ চালাতে এবং বিলম্বিত বিচার এড়াতে এই আদেশ দেয়া হয়েছে।
গত ১২ ও ১৩ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে দীর্ঘ শুনানির পর বৃহস্পতিবার আদেশের দিন ধার্য করা হয়েছিল।
দিনের শুরুতে খালেদা জিয়ার কয়েকজন আইনজীবী আদালতে জানান, তারা বুধবার বিএনপি চেয়ারপার্সনের সঙ্গে দেখা করেছেন। ওই সময় খালেদা জিয়া জানিয়েছেন, তিনি আদালতে আসতে অনিচ্ছুক নন। অর্থাৎ রাষ্ট্রপক্ষ থেকে যে আবেদন করা হয়েছিল যে, তিনি আদালতে উপস্থিত হতে অনিচ্ছুক, তা সত্যি নয়।
এই যুক্তির প্রেক্ষিতেই রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করেছিল যেন খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতেই বিচারকাজ চালানো হয়।
খালেদা জিয়া আইনজীবীদের বলেন, তিনি আদালতে যেতে অনিচ্ছুক নন, তিনি অসুস্থ। আদালতে বসে থাকতে পারেন না। এ তথ্যগুলো শুরুতেই খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আদালতকে জানান।
এসব বিষয় উল্লেখ করে বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা যেন একটি স্পেশালাইজড হাসপাতালে হয়, সে বিষয়ে তার আইনজীবীরা আবেদন করেছেন।
এছাড়া খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে বিচারকাজ কেন চলবে না, সে বিষয়ে তার আইনজীবীরা দীর্ঘ আইনি ব্যাখ্যা দিয়েছেন। একই সঙ্গে রাষ্ট্রপক্ষও আদালতের অনুমতি নিয়ে সিআরপিসিসহ বিভিন্ন দেশের উদাহরণ দিয়েছে।
দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আদালত প্রতিবেশী দেশের বেশ কিছু মামলার নজির উল্লেখ করে বলেন, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলাটি গত পৌনে দুই বছর যাবত যুক্তিতর্ক পর্যায়ে রয়েছে। অগ্রসর হচ্ছে না। এর কারণ বেগম খালেদা জিয়া সহযোগিতা করছেন না।
আদালত বলেন, খালেদা জিয়া গত ৫ সেপ্টেম্বরও আদালতে উপস্থিত হয়ে বলেছেন তিনি বারবার আদালতে আসতে পারবেন না। অর্থাৎ তিনি আদালতে আসতে অনিচ্ছুক।
সিআরপিসির ৫৪০(ক) ধারার উল্লেখ করে আদালত জানান, এ অবস্থায় আইনে অনুমোদন রয়েছে যে, আসামির অনুপস্থিতিতেও বিচারকাজ চলতে পারে, যেহেতু মামলা বিলম্বিত হচ্ছে। এছাড়া বাকি দু’জন আসামি নিয়মিত আদালতে উপস্থিত থাকেন।
তাই বাকি আসামিরা যেন ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত না হন এবং মামলাটি আর বিলম্বিত না হয় সেজন্য আদালত এ নির্দেশ দেন।
আদালতের এ আদেশের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা উচ্চ আদালতে যাবেন বলে চ্যানেল আইকে অনানুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছেন।