চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দিলে তফসিল গ্রহণযোগ্য হবে না: ফখরুল

‘ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করতে হবে’

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন: খালেদা জিয়া ও বন্দি নেতাকর্মীদের মুক্তি না দিলে নির্বাচনের তফসিল গ্রহণযোগ্য হবে না।

তিনি বলেন: আন্দোলনের মাধ্যমেই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দাবি আদায় করতে হবে। এখন সংকট আরও কঠিন, আরও ভয়াবহ।

শুক্রবার বিকেলে রাজশাহীতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জনসভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সেখানে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।

ফখরুল বলেন: আমরা সরকারকে খুব স্পষ্ট কথা বলেছি। ৭ দফা দাবি মেনে শান্তিপূর্ণ উপায়ে সংকট সমাধানের কথা বলেছি। কিন্তু তা হয়নি। তড়িঘড়ি করে তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে।

তিনি বলেন: বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার আগে বলেছিলেন, আমি হিংসা চাই না, ঐক্য সৃষ্টি করে গণতন্ত্র উদ্ধার করতে হবে। আমরা ঐক্য করেছি। শান্তিপূর্ণ উপায়ে সংলাপে গিয়ে ৭ দফা দিয়েছিলাম। আমরা বলেছি সংসদ ভেঙে দিতে হবে, বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে৷ তার মুক্তি ছাড়া নির্বাচন হতে পারে না। কিন্তু তারা মানেনি।

ফখরুল বলেন: বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে৷ মুক্তি দিয়ে তাকে কাজ করতে দিতে হবে। অন্যথায় কোনো নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না।

এসময় সরকার দাবি না মানলে গণতন্ত্রের জন্য খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য জীবন দিয়ে হলেও আন্দোলন করতে হবে বলে জানান ফখরুল।

বিএনপি মহাসচিব বলেন: পুলিশ আপনাদের পথে পথে বাধা দিয়েছে৷ তারপরও এসেছেন। আজকে সংকট কঠিন, ভয়াবহ৷ আজকে প্রশ্ন, দেশে গণতন্ত্র থাকবে কি থাকবে না৷ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে টিকে থাকতে পারবো কিনা। ভোট দেয়ার অধিকার, সংগঠন করার অধিকার থাকবে কিনা সে প্রশ্ন আজ সামনে৷ এই সংকট সমাধানে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।

ফখরুল আফসোস করে বলেন: বেগম খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ। চিকিৎসকরা বলেছেন, তিনি সুস্থ নন। তারপরও তাকে আবারও কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ছোট্ট একটি কক্ষে তার জন্য কারাগারের ভেতরে আদালত বসানো হয়েছে। এমন ঘটনা ব্রিটিশদের সময় হয়নি, পাকিস্তানের সময় হয়নি। খালেদা জিয়াকে কারাগারের অন্ধকারে তিলে তিলে হত্যা করা হচ্ছে। এই কষ্ট আমরা কোথায় রাখবো?

তিনি বলেন: এই সরকার বন্দুক দিয়ে জনগণের অধিকার ধ্বংস করতে চায়। কিন্তু মানুষ মুক্তি চায়। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করে দাবি আদায় করতে হবে।

এই সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে ড. কামাল হোসেনের থাকার কথা থাকলেও অসুস্থতার জন্য তিনি উপস্থিত থাকতে পারেননি। তবে মোবাইল ফোনে জনসভায় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন। 

এর আগে জনসভায় নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন: এখনও সময় আছে, নির্বাচনের তফসিল পেছান৷ ২৩ ডিসেম্বর আমাদের নির্বাচন করার কোনো পরিবেশ তৈরি হয়নি। ২৩ জানুয়ারি হলে একটি কথা ছিল। এই অল্প সময়ে ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনে যাওয়া হবে না। 

তিনি বলেন: আমরা স্পষ্ট বলতে চাই, এখনও পর্যন্ত ঐক্যফ্রন্ট কোনো সংঘাতের রাজনীতি চায় না। আমরা কোনো ষড়যন্ত্র করিনি। আমরা বলেছি দুই সংসদ একসাথে রাখা যায় না। তারা বলেছেন, সংসদ ভেঙে দিলে সামরিক অভ্যুত্থান হবে। সামরিক বাহিনীকে এতো ভয় কেন? তারা তো কোনো ক্ষতি করেনি। 

‘‘আমরা সামরিক শাসন চাই না। শেখ হাসিনাকেও চাই না। শেখ হাসিনা আপনাকে সরে যেতে হবে৷ তারপর নির্বাচন হবে। আপনি দূর থেকে দেখবেন। নির্বাচনে দাঁড়ালে দাঁড়াবেন। ভোট দেবেন। কিন্তু ক্ষমতার ডাণ্ডা আমাদের উপর চালাতে পারবেন না।’ 

জেএসডি সভাপতি আ স ম রব বলেন: আজ যে আন্দোলন শুরু হয়েছে আপনারা তা গ্রামে গ্রামে হাট-বাজারে কৃষিক শ্রমিক সর্বস্তরের জনসাধারণের মাঝে ছড়িয়ে দিন। আমাদের এই আন্দোলন চলবে। 

সমাবেশে সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনুসহ বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।