খালেদা জিয়ার প্রচ্ছন্ন সহযোগিতায় ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটেছিলো বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন: খালেদা জিয়াকে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় আসামী করা হয়নি এটা ঠিক, কিন্তু তার প্রচ্ছন্ন সহযোগিতায় এ হামলা করা হয়েছিলো। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এ দায় তিনি এড়াতে পারেন না।
বুধবার রাজধানীর ফার্মগেটস্থ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন: ঘটনার সময় খালেদা জিয়াই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। আর বাবর স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ছিলো। সে ক্ষেত্রে তার (খালেদা জিয়া) দায়িত্ব তো সে অস্বীকার করতে পারেন না।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার নিয়ে বিএনপির মিথ্যাচার তুলে ধরে তিনি আরও বলেন: আমরা মঞ্চে উঠেছি বক্তৃতা করেছি, সবই রেকর্ড করা। এর মাঝেই আমরা নাকি বোমাও মেরেছি, এতগুলো গ্রেনেড সেগুলো আমরাই মেরেছি! এগুলো যারা বলে তারা কী না পারে! আপনারা একটু চিন্তা করে দেখেন।
বিএনপি আগে থেকেই ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার পটভূমি তৈরি করেছিলো দাবি করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন: এই ঘটনার (২১ আগস্ট) ও কোটালীপাড়ায় ৭৬ কেজি বিস্ফোরক পাওয়ার আগে খালেদা জিয়া প্রতিটা প্রোগ্রামের বক্তৃতায় বলতো, আওয়ামী লীগ ১০০ বছরেও ক্ষমতায় যেতে পারবে না। আমাকে কেন্দ্র করে খালেদা জিয়ার বক্তৃতা কী ছিল? সে বলতো, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী তো দূরের কথা, জীবনে বিরোধী দলের নেতাও হতে পারবে না। কারণ ২১ আগস্ট তো তারা আমাকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করেছিল।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন: তবে যা হোক ‘আল্লাহর মাইর দুনিয়ার বাইর’ বলে একটা কথা আছে। মানুষ বোঝে না আল্লাহর শক্তি কতো। যে অভিশাপ সে আমার জন্য দিয়েছিল, সেটা এখন তার কপালে জুটে গেছে। এটা বাস্তব অভিজ্ঞতা।
জিয়াউর রহমান খন্দকার মোশতাকের সহযোগি ছিলো: জিয়াউর রহমান খন্দকার মোশতাকের সহযোগি ছিলো দবি করে এসময় প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন: জীবনে কখনো কোন ভয়ে ভীত হইনি। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেটা বাস্তবায়ন করাই আমার সব সময়ের লক্ষ্য থেকেছে। আপনার একবার চিন্তা করে দেখেন, আমার বাবা মা ভাই বোনদের হত্যা করা হয়েছে; তাদের কোন বিচার হয়নি, ইনডেমনিটি দেওয়া হয়েছিল। তাদের পুরস্কৃত করা হয়েছিল। এটা ঠিক আমার বাবার ক্যাবিনেট মিনিস্টার থেকে অনেকেই এটার সঙ্গে জড়িত ছিল। তাদের সহযোগি ছিল ওই জিয়াউর রহমান। যে তাদের একান্ত সহযোগি এটাতে সন্দেহ থাকার কোন কথা নেই। কারণ যাকে সবথেকে বিশ্বস্ত মনে করে তাকেই সেনাপ্রধান করা হয়। খন্দকার মোশতাক যখন নিজেকে অবৈধভাবে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে তখন জিয়াউর রহমানকে সেনাপ্রধান হিসেবে বেছে নিয়েছিল। জিয়াউর রহমান যদি এই ষড়যন্ত্রের সাথে লিপ্ত না থাকতো তাহলে মোস্তাক কখনোই তাকে সেনাপ্রধান করত না।
বাংলাদেশের ইতিহাসে বর্বরোচিত একটি দিন ২১ আগস্ট। এই দিনে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। নিহত হন আওয়ামী লীগের ২৪ নেতা-কর্মী। ভয়াল সেই দিনটির ১৫তম বার্ষিকী আজ।