দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে আসন্ন শীতে আফগানিস্তানের লাখ লাখ মানুষ অনাহারে থাকবে বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচী (ডব্লিউএফপি)।
দেশটির অর্ধেক জনগোষ্ঠী প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ ৮০ হাজার মানুষ চরম খাদ্য অনিশ্চয়তার মধ্যে আছে। একই সঙ্গে পাঁচ বছরের কম বয়সী ৩০ লাখ ২০ হাজার শিশু চরম অপুষ্টির ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে সংস্থাটি দাবি করেছে। ডব্লিউএফপি’র নির্বাহী পরিচালক ডেভিড বিসলে বলেছেন, আফগানিস্তান বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে রয়েছে।
গত আগস্টে আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্র সৈন্য প্রত্যাহার করে নিলে দেশটির শাসনভার দখল করে তালিবান বাহিনী। এতে করে আফগানিস্তানের ভঙ্গুর অর্থনীতি আরো নড়বড়ে হয়ে পড়ে। কারণ বিদেশী সাহায্যনির্ভর আফগানিস্তানের সব ধরণের সহায়তা স্থগিত করেছে পশ্চিমা বিশ্ব। একই সঙ্গে বিশ্ব ব্যাংক এবং আইএমএফ দেশটিতে অর্থ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে।
বিশ্ব ব্যাংকের মতে, কোন দেশের জিডিপি’র ১০% বিদেশী সহায়তা থেকে আসলে সে দেশের অর্থনীতিকে বিদেশ নির্ভর বলা হয়ে থাকে। সেখানে আফগানিস্তানের জিডিপি’র ৪০% ই আসে বিদেশী সাহায্য থেকে।
বর্তমানের আফগানিস্তানের অনেক মানুষেই এখন তাদের জমিজমা বিক্রি করে দিচ্ছে বেঁচে থাকার খাবার কিনতে। নতুন তালিবান প্রশাসন বিদেশী সম্পদ দেশে আনতেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। সরকারি চাকুরে এবং অন্যান্য পেশাজীবীর বেতনও স্থগিত রাখা হয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে ডব্লিউএফপি সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, আসন্ন শীতেও আফগান নাগরিকরা বিচ্ছিন্ন থাকলে তারা পুরোপুরিভাবে মানবিক বিপর্যয়ে পড়বে। আর এই প্রথম শহুরে আফগানরা খাদ্যের অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার পরিচালক কিউইউ ডংযু বলেছেন, শীতের সময়ে আফগানিস্তানের প্রত্যন্ত অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার আগেই জরুরি ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
গত সেপটেম্বর মাসে ডব্লিউএফপি সতর্ক করে দিয়ে বলে, আফগানিস্তানের মাত্র ৫ শতাংশ মানুষ নিয়মিত খাবার পাচ্ছে। রান্নার তেল , আটার মতো নিত্যপণ্যের দাম হয়ে গেছে আকাশছোঁয়া। অক্টোবর মাসে সংস্থাটি আবারো সতর্ক করে, দেশটির প্রায় দশ লাখ শিশু অনাহারে এবং চিকিৎসার অভাবে মারা যেতে পারে।