আগামী ২২ শে সেপ্টেম্বর মুক্তি পেতে যাচ্ছে ইমপ্রেস টেলিফিল্মের ছবি ‘খাঁচা’। দেশভাগের প্রেক্ষাপটে বরেণ্য কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের ছোটগল্প ‘খাঁচা’ অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে ছবিটি। এতে চিত্রনাট্য লিখেছেন এবং একটি বিশেষ চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভিনেতা আজাদ আবুল কালাম। মঙ্গলবার চ্যানেল আই কার্যালয়ে কথা হলো তার সঙ্গে।
কেমন আছেন?
ভালো আছি।
ক’দিন পরেই মুক্তি পেতে যাচ্ছে আপনার অভিনীত ছবি ‘খাঁচা’, এ নিয়ে কিছু বলবেন?
হ্যাঁ। ‘খাঁচা’ ছবিটির মুক্তির তারিখ চূড়ান্ত করা হয়েছে আগামী ২২ শে সেপ্টেম্বর। এতে আমি ‘অম্বুজাক্ষ’ চরিত্রে অভিনয় করেছি। যে একজন হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক। কিন্তু সেটা শুধু জীবন চালানোর তাগিদে। তার নিজেরও সংশয় রয়েছে-আদৌ কি এই চিকিৎসায় কোনো ফল আসে! শুধু অভিনয়-ই নয়, এর চিত্রনাট্যও আমি লিখেছি। আমার সাথে চিত্রনাট্য লিখেছেন ছবির পরিচালক আকরাম খানও।
‘অম্বুজাক্ষ’ চরিত্র কে ফুটিয়ে তুলতে আলাদা কোন প্রস্তুতি কি আপনাকে নিতে হয়েছে?
আলাদা কোন প্রস্তুতি নয়, বরং নিজের জীবনকে সে অবস্থায় কল্পনা করে কাজটি করেছি। ছবিটি আসলে দেশভাগের প্রেক্ষাপটে রচিত হলেও, এর সাথে সাথে একটি পরিবারের স্বপ্ন, আশা-আকাঙ্ক্ষা কীভাবে আবর্তিত হয়েছে তাকে তুলে ধরা হয়েছে। অর্থাৎ দেশভাগ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। কিন্তু এর অন্তরালে পারিবারিক এবং ব্যক্তিজীবনের দুর্ভোগ ছবিতে ফুটে উঠেছে।
ছবির গল্পটি কেমন?
একটি হিন্দু পরিবার। যাদের স্বপ্ন, দেশ তো ভাগ হয়েছে এবার তারা পূর্ববঙ্গ থেকে পশ্চিমবঙ্গে পাড়ি জমাবে। তাদের জীবনের সবকিছুতেই ফুটে ওঠে সেই স্বপ্নের প্রতিফলন। যেমন: বাচ্চারা স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেয়। কারণ, তারা ভাবে ওপারে গিয়ে তো আবার নতুন করে সব শুরু করব। তেমনি বাড়ির গৃহকর্তী চরিত্রে অভিনয় করেছেন জয়া আহসান। তার চরিত্রের নাম ‘সরোজিনী’। তার যখন বিয়ে হয় তখন বাড়িটি ছিল প্রাচুর্যে ভরপুর। কিন্তু ধীরে ধীরে সব হারিয়ে যেতে থাকে। তার মাঝেও স্বপ্ন, ওপারে গিয়ে সব নতুন করে গোছাবো। কিন্তু একসময় তারা বুঝতে পারে তাদের সে স্বপ্ন পূরণ হবার নয়। আসলে জীবনটাকে তারা সময়ের হাতে ছেড়ে দিতে একরকম বাধ্য হয়ে যায়।
ছবিতে কাজ করতে গিয়ে কোন বিশেষ স্মৃতি?
কোন বিশেষ স্মৃতি নয় বরং কাজ করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত-ই চোখে জল ঝরেছে। কাহিনীটা ছিল ভীষণ মর্মস্পর্শী। অভিনয় করতে গিয়ে আমার মনে হচ্ছিল, চরিত্রটির মাঝে বন্দী হয়ে গিয়েছি।
ছবির শুটিং কোথায় করেছেন?
শুটিং করেছি নওগাঁ এবং নড়াইলে। লোকেশন খুঁজে পেতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। নড়াইলে যে বাড়িতে অভিনয় করেছি সেটাও ছিল একটি হিন্দু বাড়ি। সে বাড়িতে লোকজন বাস করতো। তাই অভিনয়ের সময়ে সে বাড়ির বা আশেপাশের বয়স্ক লোকদের যারা এই পরিস্থিতির স্বীকার, তাদের চোখের পানি আমাদের হৃদয়কে অনেক বেশি স্পর্শ করেছে।
‘খাঁচা’র কাজ তো শেষ। তাহলে এখন কি কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছেন?
মঞ্চের ব্যস্ততা তো সবসময়-ই আছে। তাছাড়া বিভিন্ন চ্যানেলে আমার অভিনীত এবং লিখিত নাটক যাচ্ছে। পাশাপাশি নানা সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের ব্যস্ততা তো রয়েছেই।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ চ্যানেল আই অনলাইনকে সময় দেবার জন্য।
চ্যানেল আই অনলাইনকেও ধন্যবাদ।
ছবি: সাকিব-উল-ইসলাম