চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

ক্ষুদ্র শিল্প উদ্যোক্তাদের জন্য আসছে ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’

ক্ষুদ্র শিল্প উদ্যোক্তাদের দ্রুত সেবাদানে এক মাসের মধ্যে বিসিক কার্যালয়ে একটি ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেল স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার শিল্প মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত জাতীয় শিল্প উন্নয়ন পরিষদের নির্বাহী কমিটির (ইসিএনসিআইডি) সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর সভাপতিত্বে সভায় গার্মেন্টস অ্যাক্সেসরিজ ও প্যাকেজিং এবং নারিকেলের ছোবড়ার আঁশনির্ভর শিল্প দুটিকে জাতীয় অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে উদীয়মান হিসেবে উল্লেখ করে এই শিল্পের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে এ দু’টিকে অগ্রাধিকার শিল্পখাতে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

সভায় শিল্পমন্ত্রী বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখা সরকারের দায়িত্ব। বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য জনস্বার্থে সরকার কোনো কোনো শিল্পপণ্যের উৎপাদন অব্যাহত রাখবে। রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানার অব্যবহৃত জমি অন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন কাজে ব্যবহার করা হবে।

তিনি বলেন, আর কোনো রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানার জমি বেসরকারি মালিকানায় ছেড়ে দেয়া হবে না। বেসরকারিখাতে ছেড়ে দেয়া যেসব রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানায় উৎপাদন চালু হয়নি, সেগুলোকে ফেরত নেয়ার প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।

শিল্পখাতে দক্ষ জনবল সৃষ্টি করতে অবকাঠামো নির্মাণের জন্য অপেক্ষা না করে প্রাথমিকভাবে অস্থায়ী ভবনে টিটিসি’র কার্যক্রম চালুর পরামর্শ দেন তিনি।

সভায় দেশব্যাপী শিল্পায়ন প্রক্রিয়া জোরদারের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনাসহ ক্লাস্টারভিত্তিক শিল্প কারখানায় ঋণ সুবিধা বৃদ্ধি, কৃষিভিত্তিক শিল্পে প্রণোদনা প্রদান, জাহাজ নির্মাণ শিল্পের প্রসার, মোটর সাইকেল উৎপাদন ও বাজার নীতমালা চূড়ান্তকরণ, আইসিবি এএমসিএল প্রবাসী শিল্প বিনিয়োগ মিউচ্যুয়াল ফান্ড গঠন, রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প খাতের দক্ষতা বৃদ্ধি, এসএমইখাতে দক্ষ জনশক্তি তৈরি, অনগ্রসর এলাকায় শিল্প সম্প্রসারণ, স্থানীয় শিল্পপণ্যের গুণগত মানোন্নয়ন, জ্বালানি সাশ্রয়ী স্বল্প কার্বন নিঃসরণযোগ্য প্রযুক্তির ব্যবহার, মেধাসম্পদ বিষয়ক সচেতনতা সৃষ্টিসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা হয়।

এতে জানানো হয়, জাপানসহ উন্নত দেশগুলোতে এসএমইখাতে বাংলাদেশি দক্ষ জনশক্তির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এ চাহিদা পূরণে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার আওতাধীন কারিগরি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয় করে দক্ষতা উন্নয়নধর্মী প্রশিক্ষণ বাড়ানো হবে। পাশাপাশি অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে স্থাপিত শিল্প-কারখানার চাহিদা অনুযায়ী যোগ্য জনবল তৈরির প্রয়াস জোরদার করা হবে।

এসময় কৃষিপণ্যের সহজলভ্যতা বিবেচনা করে এলাকাভিত্তিক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কৃষিভিত্তিক পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়। এ লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তাদেরকে পাঁচ থেকে দশ বছর পর্যন্ত শুল্ক রেয়াতসহ অন্যান্য প্রণোদনা দেয়ার সুপারিশ করা হয়।

সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত রূপকল্প-২০২১ ও রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়নের জন্য আরঅ্যান্ডডি বাংলাদেশ নামে একটি গবেষণা প্লাটফর্ম গড়ে তোলার প্রস্তাব গৃহীত হয়। এ ছাড়াও দেশীয় উদ্যোক্তাদের মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক জটিলতাসহ অন্যান্য সমস্যা নিরসনে শিল্প সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

এসময় কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ্, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ্, ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন আহমেদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. আনোয়ার হোসেন, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব ড. নমিতা হালদার এনডিসিসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও ট্রেডবডির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।