কথা কাটাকাটির জেরে একজন সাবেক ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জনকে ভ্রাম্যমাণ আদালত কর্তৃক কারাদণ্ড দেয়ার পর করা রিটের শুনানিতে হাইকোর্ট বলেছেন, ‘মোবাইল কোর্ট (ভ্রাম্যমাণ আদালত) রাষ্ট্রীয় সামাজিক প্রেক্ষাপটে অতীব প্রয়োজনীয়। কিন্তু এর অপব্যবহার কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
সাবেক ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন সালাউদ্দিন শরীফকে ভ্রাম্যমাণ আদালত কর্তৃক তিন মাসের কারাদণ্ড দেয়ার ঘটনায় করা রিটের পর গত ৫ ডিসেম্বর বিচারপতি কাজী রেজাউল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদুল্লার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ লক্ষ্মীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শেখ মুর্শিদুল ইসলাম ও দণ্ডপ্রদানকারী লক্ষ্মীপুর সদরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নূরুজ্জামানকে ১৩ ডিসেম্বর হাইকোর্টে উপস্থিত হতে বলেন। সেই সঙ্গে সাবেক ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন সালাহ উদ্দিন শরীফকে এইদিন আদালতে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছিল।
সেই ধারাবাহিকতায় বুধবার সকালে বিচারপতি কাজী রেজাউল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদুল্লার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চান লক্ষ্মীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শেখ মুর্শিদুল ইসলাম ও দণ্ডপ্রদানকারী লক্ষ্মীপুর সদরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নূরুজ্জামান। এসময় সাবেক ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন সালাহ উদ্দিন শরীফ আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এরপর আদালত আদেশে বলেন, লক্ষ্মীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শেখ মুর্শিদুল ইসলাম এবং মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকারী সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরুজ্জামানকে ‘ভবিষ্যতে এমন কোনো পর্যায়ে যেন নিয়োগ না দেয়া হয়। যেখানে ক্ষমতার অপব্যাবহারের সুযোগ থাকে।’
আদালতে এডিসির পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী বাসেত মজুমদার, ইউএনওর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ইউসূফ হোসেন হুমায়ূন। রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিজ। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস।
ঘটনার বিবরণ থেকে জানা যায়, লক্ষ্মীপুরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি) শেখ মুর্শিদুল ইসলামের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগে সাবেক ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. সালাউদ্দিন শরীফকে আটকের পর কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
৪ ডিসেম্বর ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূরুজ্জামান তাকে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। গণমাধ্যমে এঘটনার খবর প্রকাশিত হলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কামাল হোসেন নিয়াজী ও আশফাকুর রহমান একটি রিট করেন। তবে পরবর্তীতে ৫ হাজার টাকা বন্ডে দন্ডপ্রাপ্ত সিভিল সার্জনের জামিন মঞ্জুর করেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
সিভিল সার্জন ডা.সালেহ উদ্দীন শরীফকে সাজা দেওয়ায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শেখ মুর্শিদুল ইসলামকে ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা) করা হয়।