২০০৩ সালে যখন বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক হলেন, উঠেছিল সমালোচনার ঝড়। ক্রিকেট ছেড়ে কোচিংয়ে এসেও সমালোচনা থেকে দূরে থাকতে পারেননি খালেদ মাহমুদ সুজন। তাকে জাতীয় দলের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর করার সিদ্ধান্তকে বোর্ডেরই অনেক কর্মকর্তা সাদরে গ্রহণ করতে পারেননি।
বিসিবির পরিচালক, কোচ, সংগঠক, ম্যানেজার, নির্বাচক তো ছিলেনই; এবার টেকনিক্যাল ডিরেক্টরের ছায়ায় জাতীয় দলের হেড কোচই বলা যায় তাকে। একইসঙ্গে বিভিন্ন ভূমিকা পরস্পরের মাঝে স্বার্থের সংঘাত ঘটাতে পারে। এসব সমালোচনা নিয়ে রোববার ত্রিদেশীয় সিরিজপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে খোলামেলা কথা বলেছেন সুজন। শুনিয়েছেন ক্রিকেটের প্রতি তার মমত্ববোধ ও কোচিং অভিজ্ঞতার গল্পও।
‘যখন আমি বোর্ডরুমে ঢুকি, তখন বোর্ড পরিচালক। আমাকে অন্য যে দায়িত্ব দেয়া হয়, চেষ্টা করি সেটা ভালভাবে করতে। পারি বা না পারি, সফল হই বা না হই, সেটা অন্য ব্যাপার। আমি কোন বিতর্কে যেতে চাই না। মনে করি কোচিং আমার পেশা। সেটা উপভোগ করি। ২০০৬ সালে খেলা ছাড়ার চার মাস পর থেকেই কোচিং শুরু করেছি। অনূর্ধ্ব-১৩ থেকে সব পর্যায়েই কোচিং করিয়েছি। কোচিংয়ের আমার অভিজ্ঞতা নেই, ব্যাপারটা তা নয়। আমি ভাল নাকি খারাপ কোচ, তা মানুষ বলবে। এখন কোচিং করানোটাই আমার সবচেয়ে বড় দায়িত্ব।’
‘আমি টিম ম্যানেজার ছিলাম, তখন ওটাকেই লাভবান মনে করা হয়েছিল। জানি না, সেটা কতটা হয়েছিল। যেহেতু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অভিজ্ঞতা কিছুটা হলেও আছে, বাংলাদেশ দলে খেলেছি, অধিনায়কও ছিলাম এক সময়, কিছু অভিজ্ঞতা তো ছিলই। যখন ৮৩ বা ৮৪ সালের দিকে ক্যারিয়ার শুরু করি, তখন থেকে একটা দিনের জন্যও ক্রিকেটের বাইরে থাকিনি। ক্রিকেটই আমার সবকিছু। ক্রিকেটই আমার জীবিকা। ক্রিকেট ছাড়া নিঃশ্বাস নেয়াই কঠিন।’ যোগ করেন সুজন।
জাতীয় দলের অধিনায়ক কিংবা কোচ, কখনোই ‘পিপলস চয়েজ’ হতে পারেননি সুজন! কেন এমন হচ্ছে? ধারণা নেই সুজনেরও, ‘জানি না আসলে। ২০০৩ সালে যখন দায়িত্ব নিয়েছিলাম, সময়টা খুব কঠিন ছিল। তখন দলটাকে এক করার একটা কাজ ছিল আমার। দায়িত্বটা অনেক বেশি ছিল। সে তুলনায় এখন কাজটা অনেক সহজ। কারণ এখন আমি অভিজ্ঞ। যদিও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমার অভিজ্ঞতা কম। কিন্তু গত তিন-চারটা বিপিএলে কাজ করে চাপ নেয়ার অভিজ্ঞতা হয়েছে। আমি মনে করি জাতীয় দলের চেয়ে বিপিএলে চাপ বেশি থাকে।’
জাতীয় দলে অভিজ্ঞ বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার থাকায় নিজের কাজটা সহজ হয়েছে বলে মনে করেন সাবেক এই অধিনায়ক, ‘জাতীয় দলে পরীক্ষিত ক্রিকেটার আছে। যারা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দাপটের সাথে খেলেছে। তামিম যেভাবে ব্যাটিং করে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সেরা কয়েকজন ব্যাটসম্যানের কথা বললে তার নাম বলতেই হবে। ক্রিকেটাররা ছোট থাকতেই অনেকের সঙ্গে কাজ করেছি। এই কাজটা আমার জন্য সহজ। কতটা কী করতে পেরেছি জানি না, বেশি কিছু করারও ছিল না, সিনিয়ররা নিজেদের কাজটা খুব ভাল জানে। তরুণ যারা আছে, তারা পারফর্ম করা শুরু করলে দলটা অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠবে।’
ছবি: সাকিব উল ইসলাম