মাশরাফিকে স্লেজিংয়ের জের ধরে তেড়ে আসায় শুভাশিসের উপর খেপেছিল ক্রিকেট ভক্তরা। ক্রিকেট মাঠে স্লেজিংয়ের ইতিহাস বহু পুরনো। প্রতিপক্ষকে কথার তীরে বিদ্ধ করতে গিয়ে মাঝে মাঝে জন্ম নেয় মজার কোনো ঘটনার। নেট ঘেঁটে এমন কিছু মজার স্লেজিং এর ঘটনা হাজির করা হলো চ্যানেল আই অনলাইনের পাঠকদের জন্য।
গাড়িটা পার্ক করে এসো:
দক্ষিণ আফ্রিকা আর ইংল্যান্ড খেলছে। ব্যাট করছেন ইংল্যান্ডের অ্যালান ল্যাম্ব। বল করছেন অ্যালান ডোনাল্ড। ডোনাল্ডকে তার বিখ্যাত গতির জন্য ‘সাদা বিদ্যুৎ’ ডাকা হতো। দুর্দান্ত গতির বল ব্যাটসম্যান ল্যাম্ব স্বচ্ছন্দে খেলছিলেন। একটা বল কাভার ড্রাইভ খেলে সোজা বাউন্ডারির বাইরে পাঠিয়ে দিলেন। বোলার ডোনাল্ড পরের বল করার আগে ল্যাম্বকে রাগানোর জন্য বলল- ‘ল্যাম্বি, ড্রাইভ করতে চাইলে একটা গাড়ি ভাড়া করো গে যাও।’
ল্যাম্ব এ কথা পাত্তা দিলেন না। উল্টো পরের বলেই পুনরায় চমৎকার আরেকটা কাভার ড্রাইভ করে বোলারকে বললেন- ‘যাও, এবার গাড়িটা পার্ক করে এসো।’
গাঙ্গুলিকে পাইলটের জবাব:
বাংলাদেশের অভিষেক টেস্ট। খালেদ মাসুদ পাইলট শেষের দিকে অনেকক্ষণ ধরে ব্যাট করছেন। স্বভাবসুলভ বল খাচ্ছিলেন বেশি, রান করছিলেন কম। ঠেকিয়ে ঠেকিয়ে খেলা দেখে ভারত অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলি সৌরভের তো ধৈর্যচ্যুত হয়ে পাইলটকে বললেন, “তোমাকে এমন বিরক্তিকর খেলা কে শিখিয়েছে,বল তো?”
পাইলট সাথে সাথে জবাব দিলেন, “কে আবার? তোমাদের ঐ গাভাস্কার দাদা। যিনি ওয়ানডেতে পুরো ৬০ ওভার খেলে ৩৪ রানে অপরাজিত ছিলেন!”
পুঁচকে শচীনের ব্যাটে জবাব:
১৯৮৯ সাল।লিটল মাস্টার সচীন টেন্ডুলকারের বয়স মাত্র ১৭ বছর। টেস্ট ম্যাচে ব্যাট করতে নেমেছেন পাকিস্তানের বিপক্ষে। গ্যালারিতে পাকিস্তানের সমর্থকের হাতে দেখা গেল একটা প্ল্যাকার্ড। তাতে লেখা, ‘দুধ খাওয়া বাচ্চা…ঘরে গিয়ে দুধ খাও..।’
শচীন খেলছেন দুর্দান্ত। মুশতাক আহমেদের এক ওভারে দুইটি ছক্কা মারলেন। এরপর বলে আসলেন তখনকার সেরা স্পিনার আব্দুল কাদির। কাদির টেন্ডুলকারকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বললেন, ‘পিচ্চি তুমি বাচ্চা বোলারকে(মুশতাক আহমদ) কেন মারছ? পারলে আমার বলে মারো ।’
টেন্ডুলকার নিশ্চুপ।কিন্তু ফলাফল দেখা গেল ওভার শেষে ৬,০,৪,৬,৬,৬। চার ছক্কাসহ কাদিরের ওই ওভারে পুঁচকে শচিন নিয়েছেন ২৮ রান!
স্টিভ ওয়া’র জ্ঞান দান:
স্টিভ ওয়াহ’র জীবনের শেষ টেস্ট। সিরিজ ১-১ এ সমতা। এই টেস্টে জিতলেই সিরিজ জয়। অস্ট্রেলিয়া পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে। অজি দল চাইছে ম্যাচ ড্র করতে। স্টিভ ওয়াহ খুব দেখে শুনে খেলছেন। যাতে টেনে টুনে দিন শেষ করে ম্যাচটাকে ড্র করা যায়।উইকেটের পেছন থেকে পার্থিব প্যাটেল বললেন, ‘শেষবারের মতো আউট হওয়ার আগে তোমার বিখ্যাত স্লগ সুইপ খেলে নাও।’
জবাবে স্টিভ ওয়াহ বললেন, ‘সম্মান দেখিয়ে কথা বলো। যখন আমার প্রথম টেস্ট খেলতে নামি, তুমি তখন ডায়াপার পরতে।’
পন্টিংয়ের জবাব:
শন পোলকের বলে নাস্তানাবুদ হচ্ছেন রিকি পন্টিং। কিছুতেই খেলতে পারছেন না।বল হাতে রিকি পন্টিংয়ের দিকে এগিয়ে গেলেন পোলক। বাঁকা হাসি দিয়ে বললেন, ‘তুমি ক্রিকেট বল চেনো তো? এটা লাল, গোলাকার, ওজন পাঁচ আউন্সের কাছাকাছি।’
পরের বলেই ছক্কা হাঁকালেন পন্টিং।যেমন তেমন ছক্কা না। একেবারে মাঠের বাইরে বল। ছক্কা মেরে পোলকের দিকে এগিয়ে গেলেন পন্টিং। শান্ত স্বরে বললেন, ‘তুমি তো জানো বলটা দেখতে কেমন। যাও, খুঁজে নিয়ে এসো।’
আপনাকেউ ক্যাচ ধরে ফেলতাম:
ইংল্যান্ড দলের বিখ্যাত উইকেটরক্ষক ফ্রেড প্রাইস একদিন দুর্দান্ত খেললেন। সাত সাতটি ক্যাচ লুফে নিয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিলেন। খেলা শেষে এক ভদ্রমহিলা এলেন তার কাছে। বললেন, ‘আপনার উইকেটকিপিং দেখে আমি দারুণ উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলাম। আরেকটু হলে বোধহয় গ্যালারি থেকে পড়েই যেতাম।’
প্রাইস উত্তরে বললেন, ‘পড়ে গেলেও ভয়ের কিছু ছিল না। আজ আমি যে ফর্মে আছি, আপনাকেও নিশ্চয়ই ক্যাচ ধরে ফেলতাম।’
ব্যাটসম্যানের স্ত্রীর ফোন:
১৯৫৮ সালের মার্চ মাস। দক্ষিণ আফ্রিকার হোউইকে খেলা চলছে। ব্যাটসম্যান মাত্র ব্যাট করতে নেমেছেন। হঠাৎ ড্রেসিংরুমের ফোন বেজে উঠল। ফোন করেছেন ব্যাটসম্যানের স্ত্রী। তাকে বলা হলো যে আপনার স্বামী ব্যাট করতে নেমেছেন। দয়া করে একটু পরে ফোন করুন। ‘না, খুব জরুরী।’ বললেন স্ত্রী। নিরুপায় হয়ে খেলা বন্ধ রাখতে হলো। তাড়াতাড়ি ড্রেসিংরুমে ফিরে ফোন ধরলেন ঐ ব্যাটসম্যান। টেনশন লাগছে তার। না জানি কোন দুঃসংবাদ অপেক্ষা করছে। ফোন ধরে স্ত্রীকে বললেন, “হ্যালো। কি হয়েছে?”
স্ত্রী বললেন, “বাথরুমের সাবানটা কিছুতেই খুঁজে পাচ্ছি না। কোথায় রেখেছো?”
দর্শক সৌরভকে না, শচীনকে দেখতে আসে:
ভারতের মাটিতে ভারত-অস্ট্রেলিয়া ওয়ানডে ম্যাচ হচ্ছে! শচীন-গাঙ্গুলী ব্যাটিং করছেন অনেকক্ষণ ধরে।
একসময় শেন ওয়ার্ন বল করতে এলেন। সৌরভ গাঙ্গুলী বেশ কয়েকটা বল টাইটভাবে ডিফেন্স করলেন। ওয়ার্ন সামনে হেঁটে গিয়ে গাঙ্গুলীকে বললেন, ‘শোনো, এই বিপুল সমর্থক পয়সা কেটে মাঠে এসেছেন শচীনের সুপার শটগুলা দেখার জন্য, তোমার ডিফেন্স করা দেখতে নয়!’এর পর পরই শেন ওয়ার্নের দ্বারা স্ট্যাম্পড আউট হয়ে গেলেন সৌরভ গাঙ্গুলি।