ঈদুল আযহা বা কোরবানীর ঈদ দ্বারপ্রান্তে। কয়েকদিন পরই পালিত হবে মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় এই উৎসব। কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে ইতোমধ্যেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহর থেকে নাড়ির টানে গ্রামে ফিরতে শুরু করেছেন।
কোরবানীর ঈদে নানা ধরনের প্রস্তুতির সঙ্গে জবাইকৃত পশুর বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়ও ভাবতে হয়। এ বিষয়টি মাথায় রেখেই এবারের ঈদুল আযহার পশু কোরবানির বর্জ্য ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণ করার ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)। এছাড়া বর্জ্য অপসারণের সার্বিক কাজ ফেসবুকে তদারকি করা হবে বলেও জানিয়েছেন মেয়র সাঈদ খোকন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের এই উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই।
এবার ডেঙ্গু পরিস্থিতি যে অন্যান্য বছরের তুলনায় খুবই ভয়াবহ, এটা সবারই জানা কথা। এর উপর যদি দ্রুত সময়ের মধ্যে কোরবানীর বর্জ্য, পানি, রক্ত ইত্যাদি অপসারণ না করা হয় তাহলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। তাই এ বিষয়টিকে খুবই গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে। এছাড়া যেখানে সেখানে পশু কোরবানীর সংস্কৃতি থেকেও আমাদের বের হয়ে আসতে হবে।
মেয়র বলেছেন: প্রতিটি ওয়ার্ডে কমপক্ষে ৫টি পশু কোরবানির নির্ধারিত স্থান হিসেবে ডিএসসিসি এলাকায় ৩৩৯টি কোরবানির নির্ধারিত স্থান রয়েছে। সেখানে প্যান্ডেল, পানি, ইমামসহ যাবতীয় ব্যবস্থা রাখা হবে। নগরবাসী যদি ওইসব নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানী করেন তাহলে সিটি কর্পোরেশনের জন্য বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সহজ হবে।
এরপরও কোনো কারণে যদি নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানি সম্ভব না হয়, তাহলে নাগরিকদের কী করতে হবে সেটাও বলেছেন মেয়র। তিনি বলেন: যেখানেই কোরবানি করবেন সেখানে পানি কিংবা রক্ত জমতে দেবেন না। পশুর রক্ত পানি দিয়ে ধুয়ে সেখানে ব্লিচিং পাউডার দিতে হবে। এছাড়াও সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে সবাইকে বড় ব্যাগ দেয়া হবে। সেই ব্যাগে বর্জ্য ঢুকিয়ে নির্ধারিত স্থানে রাখবেন। আমাদের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা গিয়ে বর্জ্য সংগ্রহ করবেন।
নিজেদের স্বার্থেই মেয়রের এই অনুরোধে সাড়া দেয়া সবার নৈতিক দায়িত্ব বলে আমরা মনে করি। তবে এটা শুধু ঢাকার জন্যই প্রযোজ্য নয়, বরং দেশব্যাপী কোরবানীর সব স্থানেই এমনটা হওয়া উচিত। প্রশাসনসহ স্থানীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে এজন্য এখন থেকেই প্রস্তুত হতে হবে। কোরবানী যারা করবেন তাদেরকেই এ বিষয়টা সবচেয়ে বেশি খেয়াল রাখতে হবে। কোরবানীর মূল শিক্ষা ধারণ করে জনজীবনে ভোগান্তি রোধে যার যার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসতে আমরা সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।