আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ বুলেটিন অনুযায়ী রাত ৩ টা পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড় ‘কোমেন’ সামান্য উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। ঘূর্ণিঝড়ের টানে এবং পূর্ণিমার প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় স্বাভাবিকের তুলনায় ৪-৫ ফুট উচ্চতার জোয়ারের কারণে জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনা রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার উপকূলে ৭ নম্বর এবং মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর এলাকায় ৫ নম্বর বিপদসংকেত জারি রেখেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ঘূর্ণিঝড়টি আজ দুপুর কিংবা বিকাল নাগাদ লক্ষ্মীপুর-ভোলা হয়ে বাংলাদেশ অতিক্রম করবে বলে জানানো হয়েছে। সর্বশেষ বুলেটিনে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ছোট-বড় সকল নৌযানকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ‘কোমেন’ ও সম্ভাব্য জলোচ্ছ্বাসের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে মাইকিং, আশ্রয়কেন্দ্র, শুকনো খাবারের মজুদ এবং মনিটরিংয়ের জন্য কন্ট্রোল রুমসহ দুর্যোগপূর্ব সবরকম প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। চট্টগ্রামের উপকূলবর্তী ৫ উপজেলায় জারি করা হয়েছে ‘রেড অ্যালার্ট’। স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করে সাইক্লোন সেন্টার হিসেবে খোলা রাখা হয়েছে।
যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং বন্দর কর্তৃপক্ষ। তাদের সহযোগিতা করছে পুলিশ এবং রেডক্রিসেন্ট।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো: আব্দুল জলিল জানিয়েছেন, চট্টগ্রামের ৫ টি উপকূলীয় উপজেলায় সর্বোচ্চ সতর্কতা বা রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। জনগণকে সতর্ক করতে এবং আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে মাইকিং করা হয়েছে বলে জানান তিনি। এছাড়া প্রশাসনের তরফ থেকে ত্রাণ, ওষুধ, শুকনা খাবার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উদ্ধার তৎপরতাসহ দুর্যোগের আগে-পড়ে সেবা দিতে তারা মাঠে আছে বলে চ্যানেল আই অনলাইনকে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-পরিচালক মো: আসাদুজ্জামান। তিনি জানান, দুর্যোগ মোকাবিলায় টেকনাফ,কক্সবাজারের সকল স্টেশনগুলোকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুরসহ উপকূল জুড়ে বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের প্রশাসনিক পরিচালক জাফর আলম জানিয়েছেন, বন্দরে ৫ টি কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। সার্বিক দিক পর্যালোচনার জন্য কর্মকর্তাদের নিয়ে রাত আড়াইটা পর্যন্ত দু’দফা জরুরি সভায় বসেছিলেন তারা। বর্তমানে অভ্যন্তরীণ ও বহির্নোঙর মিলিয়ে মোট ৯১ টি জাহাজ বন্দর এলাকায় অবস্থান করছে। তাদেরকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তবে সাগরে অসংখ্য মাছধরা ট্রলার রয়েছে বলে জানা গেছে।
বিরূপ আবহাওয়ায় রাতে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর বন্ধ রাখা হয়। আজ কোনো ফ্লাইট পরিচালিত হবে কি না সে বিষয়ে সকালে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।