অ্যানফিল্ডে ম্যাচের সময় কান পাতলে একটি নাম দিয়ে বানানো গান শোনা যায় খুব জোরেশোরেই। সালা…হ, সালা…হ! মাত্র এক মৌসুম হতে চলল লিভারপুলে নাম লিখিয়েছেন। মোহাম্মেদ সালাহ অলরেড সমর্থকদের এমন জাদুতে বশ করেছেন যে, তার নামে পাগল লিভারপুলের ২ বছর বয়সী সমর্থকও!
মৌসুমে ৪০ গোল হয়ে গেছে ইতিমধ্যেই। ‘মিসরের রাজা’ কোথায় গিয়ে থামবেন সেটা জানে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। সঙ্গে সবার কৌতূহল একটাই, সালাহর এমন বিধ্বংসী হওয়ার কারণটা কী?
কারণটা জানতে হলে ফিরে যেতে হবে পাঁচ বছর আগে। লিভারপুলের বর্তমান কোচ ইয়ূর্গেন ক্লপ তখন ছিলেন বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের দায়িত্বে। জার্মান দলটির সঙ্গে প্রাক-মৌসুমের ম্যাচ খেলতে এসেছিল বাসেল। সুইস দলটির হয়ে তখন চোখ জুড়ানো এক গোলে ক্লপের হৃদয় কেড়েছিলেন সালাহ।
তখন থেকেই সালাহকে চোখে চোখে রেখেছেন ক্লপ। চেয়েছিলেন তরুণ সালাহকে দলে টানতে। কিন্তু ততদিনে চেলসিতে নাম লিখিয়ে ফেলেছেন এ মিসরীয় তারকা। এরপরও সালাহর প্রতি টান এতটুকুও কমেনি ক্লপের।
চেলসিতে ফ্লপ এক মৌসুম কাঁটিয়ে ফ্লোরেন্টিনা হয়ে রোমাতে নাম লেখান সালাহ। ইতালিয়ান দলটির হয়ে এক মৌসুমে করেন ১৯ গোল। তাতে আবারও সালাহর প্রতি টান জেগে ওঠে ক্লপের। ততদিনে তিনি লিভারপুলের কোচ। পরে প্রায় ৪০ মিলিয়ন পাউন্ড খরচ করে সালাহকে অ্যানফিল্ডে আনেন। প্রথমে তা অপচয় মনে হলেও এখন রীতিমত সাফল্যের চাবিকাঠি মনে হচ্ছে লিভারপুল সমর্থকদের কাছে।
সালাহ কোন গোল পেলে আগে থেকেই তার পেছনের কারণটা লিখে রাখতেন ক্লপ। প্রিয় শিষ্যকে হাতের কাছে পেয়ে সেই নোট বইয়ের যথার্থ ব্যবহার করে চলেছেন লিভারপুল বস। কোথায় দুর্বল সালাহ, কোথায় বল পেলে গোল করতে পারবেন, সবকিছু খুঁটিনাটি বিশ্লেষণ সেরে রেখেছেন ক্লপ।
এরইমধ্যে ৪০ গোল করে কোচের পরিশ্রমের মূল্যও দিয়েছেন সালাহ। আর সাত গোল হলেই এক মৌসুমে ইয়ান রাশের ৪৭ গোলের প্রিমিয়ার লিগ রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলবেন। লিভারপুলও মুগ্ধ সালাহর এমন উত্থানে। শারীরিকভাবেও এখন বেশ শক্ত-পোক্ত হয়েছেন মিশরীয় ফরোয়ার্ড। পেয়েছেন ইচ্ছেমত খেলার স্বাধীনতা। ক্লপের অধীনে খেলে গতিও বেড়েছে সালাহর।
অলরেড সমর্থকরা আশায় আছেন, কোচের ভালোবাসার মূল্য দিয়ে লিভারপুলেই থাকবেন সালাহ। তাতে হয়ত দলটির আকাশে জ্বলবেন আরও অনেকটা সময় ধরে। অলরেডদের হয়ে যে ফর্মে আছেন, ধরে রাখতে পারলে কোথায় পৌঁছাবেন মিশরীয়-মেসি খ্যাত এ তারকা সেটাই কেবল জানার অপেক্ষা!