চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

কে ভোট দিলো, কে দিলো না তা বিবেচনা করে না আওয়ামী লীগ: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কে ভোট দিলো, কে দিলো না তা বিবেচনা করে না আওয়ামী লীগ। জনগণ এখন পর্যন্ত সরকারের প্রতি আস্থা রেখেছে বলে জনগণকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

শনিবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত মনোনয়ন বোর্ডের যৌথসভা শেষে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যদি আমাদের মনের কথা জনগণকে বোঝাতে পারি তাহলে আমাদের ভোটের সমস্যা হওয়ার কথা না। আমাদের ওপর জনগণের বিশ্বাস ও আস্থা আছে। দীর্ঘদিন একটানা ক্ষমতা থেকেও যে জনগণের বিশ্বাস ধরে রাখতে পেরেছি এটা আমাদের জন্য বড় অর্জন।

তিনি বলেন, ‘আমরা কতগুলো অভিযান চালাতে পেরেছি। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে, মাদকের বিরুদ্ধে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে এই অভিযানগুলো কিন্তু অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশ একটা শান্তিপূর্ণ দেশ হবে, দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ একটা উন্নত বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে উঠবে। এই স্বপ্ন জাতির পিতা দেখেছিলেন। ক্ষুধামুক্ত, দরিদ্রমুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন তিনি দেখেছিলেন। আমরা বিশ্বাস করি আমরা তা পারবো।’

ইতোমধ্যে দরিদ্র দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে আমরা উন্নীত হয়েছি। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমরা এগিয়ে যাবো। এই ধারাবাহিকতা আমাদের ধরে রাখতে হবে যোগ করেন তিনি।

চট্টগ্রামের বিষয়ে তিনি বলেন, চট্টগ্রামের তো উন্নয়নের সীমাই নাই। কারণ এত বেশি উন্নয়ন আমরা করেছি সেখানে। আপনাদের মনে আছে চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন কর্ণফুলী নদী দিয়ে টানেল করার আন্দোলন করেছিলেন। আজ সেখানে সেই টানেল কিন্তু আমরা নির্মাণ করছি। আমাদের দুর্ভাগ্য তিনি আর সেটা দেখে যেতে পারলেন না। ঠিক সেভাবে আমরা সারাটা বাংলাদেশে সঠিকভাবে উন্নয়ন করে যাচ্ছি বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘বগুড়া। যে বগুড়ায় আমাদের ভোটই দেয় না সেখানেও কিন্তু যত উন্নয়ন তা আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হয়েছে। বগুড়ার লোক থাকতে কিন্তু এতটা উন্নয়ন হয়নি যতটা আমরা করতে পেরেছি। ঠিক সেভাবে যশোর বাগেরহাট, গাইবান্ধা…যে গাইবান্ধা এক সময় মানুষের খুবই দুরাবস্থা ছিল। আজ সেখানকার মানুষেরও জীবনমানের পরিবর্তন হয়েছে। আর ঢাকা শহরে তো আমরা ব্যাপক উন্নয়ন করে যাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের উন্নয়ন কিন্তু তৃণমূল পর্যায়ে। এমন না যে আমরা শুধু শহরে উন্নয়ন করে যাচ্ছি। আমার গ্রাম আমার শহর স্লোগানে আমরা কাজ করছি। অর্থাৎ গ্রামে বসেও যাতে শহরের সুবিধা পায় সেভাবে কাজ করছি। আমাদের প্রত্যেকটা উন্নয়নের মূল লক্ষ্য হল আমাদের গ্রামের মানুষগুলো যেন সমান সুবিধা পায়। উন্নয়নের সেবা সেখানে পৌঁছায়।’

জনগণের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই যে উন্নয়ন, উন্নয়নের এই ধারা ধরে রাখতে হলে নৌকা মার্কায় ভোট অব্যাহত রাখতে হবে। নৌকা মার্কা ছাড়া উন্নয়ন হয় না। নৌকা স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। কাজেই আপনারা জনগণের কাছে যাবেন। আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের কথাগুলো বলবেন। আপনারা যদি চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে ও ৫ টি উপনির্বাচনে আমাদের বার্তাগুলো জনগণের কাছে পৌঁছাতে পারেন তাহলে নিশ্চয়ই তারা আমাদের ভোট দিবে।’

তিনি বলেন, ‘বিশেষ করে আমাদের মা-বোনেরা তো দিবেই। কারণ আজ যে নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে গেছে। ছাত্র-সমাজ থেকে শুরু করে মেহনতী মানুষ, কৃষক-সমাজ…..প্রত্যেকের উন্নয়ন করে যাচ্ছি। কোনো শ্রেণীকেই আমরা বাদ দিচ্ছি না। প্রত্যেকটা সেক্টরের বিষয়ে সুনির্দিষ্টি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটাই কথা ১৫ আগস্টে বাবা-মা সবাইকে হারিয়েছি। দেশটা স্বাধীন করতে আমরা বাবা-মা মারা গেছেন। যে স্বপ্ন নিয়ে আমার বাবা দেশটা স্বাধীন করে গেছেন তা পূরণ করতে হবে। এটাই হচ্ছে আমার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য। সেখানে আপনাদের সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন। আপনরা নিঃস্বার্থভাবে মানুষের জন্য কাজ করবেন। মানুষের জন্য কাজ করার চেয়ে ভাল লাগার বিষয় একজন রাজনৈতিক নেতার জন্য আর কী হতে পারে। সবাইকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে কাজ করতে হবে।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং সংসদীয় বোর্ড ও স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সভার সভাপতিত্ব করেন।

এ সভায় ঢাকা-১০, বগুড়া-১, বাগেরহাট-৪, যশোর-৬, গাইবান্ধা-৩ সংসদীয় আসনে উপনির্বাচন এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়নের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।