কেরানীগঞ্জের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সংগ্রহ করা হচ্ছে আর্বজনা। স্থাপন করা হয়েছে নিজস্ব ডাম্পিং স্টেশন। গ্রামে গ্রামে ও প্রতিটি ইউনিয়নে বরাদ্দ করা হয়েছে পরিবেশ বান্ধব আধুনিক ময়লার গাড়ি। রাস্তাঘাটের ময়লা পরিষ্কার করার জন্য রাখা হয়েছে পরিচ্ছন্নতাকর্মী। সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশ রক্ষায় কেরানীগঞ্জের ১১টি খাল উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
ময়লা সংগ্রহ ও তার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার আলাদা তাগিদও রয়েছে। কারণ কেরানীগঞ্জে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাইলট প্রকল্প শুরু করা হবে খুব শিগগিরিই। এই প্রকল্পটি এখানে সফল হলে পরে দেশের অন্যান্য জায়গায়ও এটি চালু করা হবে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে দুই মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রতিদিন ১০০ টন বর্জ্য প্রয়োজন হবে।
কিন্তু কেরানীগঞ্জ থেকে প্রতিদিন ৪০টন বর্জ্য পাওয়া যাবে। বাকি বর্জ্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন থেকে সংগ্রহ করতে হবে। তাই এ বিষয়ে মেয়রের সাথে আমাদের আলাপ-আলোচনা চালাচ্ছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য, বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। এ প্রকল্পের জন্য ব্যয় হবে প্রায় ২০ মিলিয়ন ডলার।
কেরানীগঞ্জ শিল্পাঞ্চল হওয়ায় সে শিল্পের বর্জ্য ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পথে অনেকটাই এগিয়ে গেছে কেরানীগঞ্জ। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী এবং কেরানীগঞ্জের সংসদ সদস্য নসরুল হামিদ বিপু কেরানীগঞ্জের বর্জ্য ময়লা-আবর্জনা দিয়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। এ জন্য এরই মধ্যে কেরানীগঞ্জে জমি অধিগ্রহণ শেষ হয়েছে। কেন্দ্রটির নির্মাণকাজ উদ্বোধন করার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।
নসরুল হামিদ বিপু বলেন, বর্জ্য সম্পদে পরিণত হওয়ার যে পরিকল্পনা এত দিন আমরা করেছি তার বাস্তব রূপ নিতে যাচ্ছে এখন। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে কেরানীগঞ্জ পরিবেশ বান্ধব এবং দৃষ্টিনন্দন একটি শহরে পরিণত হবে বলে মনে করেন তিনি।
কেরানীগঞ্জকে পরিকল্পিত নগরী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ‘পরিচ্ছন্ন কেরানীগঞ্জ গড়ি, সুস্থ জীবনযাপন করি’ স্লোগানকে সামনে রেখে পরিকল্পিত নগরী গড়ার বেশ কিছু পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। বেশ কিছু পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয়েছে, কিছু বাস্তবায়নের পথে।
উৎস থেকেই পৃথক করে পচনশীল বর্জ্য ও রিসাইকেল করা যাবে এমন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। আবাসিক এলাকা, রাস্তার পাশ, শিল্প-কলকারখানা, প্লান্ট, নির্মাণ সাইট, দোকানের পাশের ময়লা ডাম্পিং করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেরানীগঞ্জ শিল্পাঞ্চল এবং এখানে ছোট-বড় অনেক শিল্প-কলকারখানা রয়েছে; তাই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
কেরানীগঞ্জে ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা করা হয়েছে। নেওয়া হয়েছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের পরিচ্ছন্ন কেরানীগঞ্জ গড়ে তুলতে বিশেষ উদ্যোগ। ভ্রাম্যমাণ ময়লা ফেলার জায়গাগুলোও উন্মুক্ত করে রাখা হবে না। স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদরাসাসহ পাবলিক প্লেস ও নান্দনিক প্রতিটি জায়গায় ছোট ছোট ডাস্টবিন সরবরাহ করা হয়েছে।