কোটি কোটি ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য পাচারের ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুককে ৫শ’ কোটি মার্কিন ডলার জরিমানা করছে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি)।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক রাজনৈতিক পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা ২০১৪ সাল থেকে ফেসবুকের কাছ থেকে অর্থের বিনিময়ে এসব তথ্য হাতিয়ে নিয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। এ অভিযোগ ইতোমধ্যে স্বীকারও করেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি।
বিবিসি জানায়, প্রায় ৮ কোটি ৭০ লাখ ফেসবুক ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য বেহাত ও অপব্যবহারের অভিযোগ নিয়ে এফটিসি গত বছরের মার্চে তদন্তে নামে।
তদন্ত শেষে ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষায় ব্যর্থ হওয়ার প্রমাণ পাওয়ায় ফেসবুককে রেকর্ড ৫শ’ কোটি ডলার জরিমানা করেন মার্কিন এ বাণিজ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার কমিশনাররা।
৩-২ ভোটে এফটিসি’তে জরিমানার এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন পায় বলে শুক্রবার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকটি সূত্রের বরাত দিয়ে জানায় ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।
নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, বোটে জরিমানার পক্ষে ছিলেন রিপাবলিকানরা। আর ডেমোক্র্যাটরা বিরোধিতা করেছেন। ডেমোক্র্যাটদের অনেকে ফেসবুকের ওপর আরও কঠোর নীতিমালা আরোপের দাবি জানিয়েছেন। কেউ আবার এফটিসির সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেছেন এই জরিমানা যথেষ্ট নয়।
জরিমানার বিষয়টি এখন বিচার বিভাগের দেওয়ানি শাখায় চূড়ান্ত অনুমোদন পেতে হবে। তবে সেই অনুমোদন পেতে কতদিন লাগবে সেটি স্পষ্ট নয়।
চূড়ান্ত হয়ে গেলে এটিই হবে কোনো প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের ওপর এফটিসি’র আরোপিত সবচেয়ে বড় অংকের জরিমানা।
এ ব্যাপারে বিবিসি ফেসবুক ও এফটিসি’র সঙ্গে যোগাযোগ করলে কোনো কর্তৃপক্ষই মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
অবশ্য চলতি বছরের শুরুতেই ফেসবুক বলেছিল, ঠিক এই পরিমাণ জরিমানাই ধারণা করছে তারা। এজন্য বিনিয়োগকারীদেরকে গত এপ্রিলেই কর্তৃপক্ষ বলে দিয়েছিল, তারা আগেই জরিমানার টাকাটা সরিয়ে রাখছে, যেন জরিমানা দেয়ার সময় এর প্রভাব প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসার ওপর তেমন একটা না পড়ে।
ফলে ফেসবুকের বিনিয়োগকারীরা জরিমানার খবরটি বেশ ইতিবাচকভাবেই নিয়েছেন, যার প্রমাণ হলো কোম্পানিটির শেয়ারের সূচক ১.৮ শতাংশ বেড়ে যাওয়া।
এর আগে গত বছরের অক্টোবরে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা ইস্যুতে যুক্তরাজ্যও ৫ লাখ ব্রিটিশ পাউন্ড জরিমানা করেছিল যুক্তরাজ্যের ইনফরমেশন কমিশনার’স অফিস (আইসিও)। এটিও ছিল যুক্তরাজ্যে আইসিও’র আরোপিত এ ধরনের সবচেয়ে বড় অংকের জরিমানা।