গণসমাবেশ ও প্রতিবাদী গানের মাধ্যমে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার দাবি জানিয়েছেন বিশিষ্টজনরা। শুক্রবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ধর্ষণবিরোধী কর্মসূচি থেকে এ দাবি জানানো হয়।
ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার দাবিতে ‘অপরাজেয় বাংলা’, ‘গৌরব একাত্তর’ ও এর সমমনা সংগঠনসমূহ এই কর্মসূচির আয়োজন করে।
অপরাজেয় বাংলার আহ্বায়ক এইচ রেহমান মিলুর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাংবাদিক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আরিফা রহমান রুমা, বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদের সহসভাপতি ডা. মাহবুবুর রহমান, প্রজন্ম একাত্তর এর প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ রেজা নূর, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক সালমা আহমেদ প্রমুখ।
গোলাম কুদ্দুস বলেন, ধর্ষণের বিরুদ্ধে কঠোর আইন ও ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে। পাঠ্য বইয়ে ধর্ষণ ও নৈতিক শিক্ষার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। শুধু খারাপ চরিত্রের মানুষই ধর্ষণ করে না, অনেক সময় ভালো মানুষের মুখোশধারী ব্যক্তিদের মাধ্যমেও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।
বিএনপি সরকারের আমলের বিভিন্ন ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, অনেক সময় রাজনৈতিক কারণেও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ধর্ষণের বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে, এখনই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে, যাতে কোনো ধর্ষক পার না পায়।
সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা বলেন, বর্তমান নারী ও শিশু ধর্ষণের ঘটনা দেখে মনে হচ্ছে যেন বাংলাদেশ একাত্তরে ফিরে গেছে। একাত্তরে পাকিস্তানিরা যেমন নারীদের অপমানের বস্তু হিসেবে ব্যবহার করেছিল, বর্তমানে নতুন করে সাম্প্রদায়িক শক্তি সেই কাজই শুরু করেছে। দেশের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ থাকলেও ধর্ষণের ঘটনা এখনও বন্ধ হয়নি। এ অবস্থা থেকে বেড়িয়ে আসতে হবে।
এইচ রেহমান মিলু বলেন, ধর্ষণ মৃত্যুর চেয়ে কোনো অংশেই ছোট অপরাধ নয়। যিনি ধর্ষিত হচ্ছেন তিনি প্রতিনিয়তই মারা যাচ্ছেন। এসময় তিনি ধর্ষণের বিচারের জন্য সময়সীমা নির্ধারণ ও এই জঘন্য অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার দাবি জানান। এই বিচারের জন্য একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনেরও দাবি জানান তিনি।
বক্তারা আরো বলেন, ধর্ষণ এখন মহামারী আকার ধারণ করেছে। একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। অথচ জড়িতরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আসছে না। ফলে এ ধরনের ঘটনা বেড়েই চলছে।
তারা বলেন, সামাজিক আন্দোলনের পাশাপাশি এ ধরনের ঘটনায় জড়িতদের উপযুক্ত শাস্তির আওতায় আনতে না পারলে আমরা পিছিয়ে পড়ব। পিছিয়ে যাবে নারী অগ্রযাত্রা। আর এ কথা মনে রাখতে হবে, নারী অগ্রযাত্রা পিছিয়ে গেলে রাষ্ট্রও পিছিয়ে পড়বে।