দেশের কৃষিকে লাভজনক ও বাণিজ্যিকভাবে টেকসই করে ফসল উৎপাদন বাড়াতে চায় সরকার। এ জন্য ৩ হাজার ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ’ শীর্ষক একটি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।
মঙ্গলবার এই প্রকল্পসহ প্রায় ১০ হাজার ১০২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৮ প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে একনেক। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে ১০ হাজার ৬৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৩৩ কোটি ১৩ লাখ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভায় এ প্রকল্পগুলোর অনুমোদন দেয়া হয়। রাজধানীর শেরে-বাংলা নগরের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে সংযুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।
সভা শেষে প্রকল্পগুলো নিয়ে সাংবাদিকদের ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
তিনি বলেন, কৃষি যান্ত্রিকীকরণের বিকল্প নেই। এগিয়ে যেতে হলে কৃষিকে আধুনিক করতে হবে। উৎপাদন খরচ কমিয়ে উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ হিসেবে কৃষি যান্ত্রিকীকরণের প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এছাড়াও দুর্গম পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের মানুষের জন্য সোলার প্যানেলের মাধ্যমে সৌর বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে।
‘সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ’ শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৩ হাজার ২০ কোটি টাকা। দেশের ৬৪ জেলার সবগুলো উপজেলায় এটি বাস্তবায়ন করবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই)।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে কৃষিকে ব্যবসায়িকভাবে অধিক লাভজনক ও বাণিজ্যিকভাবে টেকসই করে ফসল উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব বলে জানান তিনি।
এম এ মান্নান বলেন, ‘চলতি মাস (জুলাই) থেকে শুরু হয়ে ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। এর ফলে আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ ও ব্যবহার বাড়িয়ে ফসলের ১০-১৫ শতাংশ অপচয় রোধ করা যাবে। এছাড়া চাষাবাদে ৫০ শতাংশ সময় এবং ২০ শতাংশ অর্থ সাশ্রয় করা যাবে। পাশাপাশি সমন্বিত সবজি জাতীয় ফসল আবাদ করে কৃষি যন্ত্রপাতির ৫০ শতাংশ কর্মদক্ষতা বাড়ানো যাবে।
একনেকে অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক অবকাঠামো উন্নয়নসহ নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণ (দ্বিতীয় সংশোধিত) প্রকল্প, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে নতুনভাবে ১৮টি ওয়ার্ডেও সড়ক অবকাঠামো ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা নির্মাণ ও উন্নয়ন-ফেজ-১, তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি, ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভূমি জরিপ করার জন্য ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের ডিজিটাল জরিপ পরিচালনার সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ, ভূমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন, পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত এলাকায় সোলার প্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ (দ্বিতীয় পর্যায়) প্রকল্প এবং বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়ন ও রংপুর জোন (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প।