শ্যামল ভৌমিক, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা ও দুধকুমারসহ সবগুলো নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে।পানিবন্দি হয়ে পড়েছে জেলার ৯ উপজেলার ৬০ ইউনিয়নের প্রায় ৩ লক্ষাধিক মানুষ।বন্যায় এখন পর্যন্ত সাপের কামড়ে একজন ও পানিতে ডুবে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ঘর-বাড়ী ছেড়ে বানভাসী মানুষ আশ্রয় নিয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ উচু জায়গায় ও পাকা সড়কে। পানি প্রবল বর্ষণে ভেসে গেছে প্রায় দুই শতাধিক ঘর-বাড়ি। অনেক পরিবার এক কাপড়ের অবস্থান করছেন নিরাপদ আশ্রয়ে। বাঁধে ও পাকা আশ্রয় নেয়া পরিবার গুলো অভিযোগ করেন গত ৩দিন থেকে খোলা আকাশের নীচে অবস্থান করলেও কেউ কোন সাহায্য পাননি। অনেকে অভিযোগ করেন দিনে এক বেলাও খাবার জুটছে না তাদের।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি বিপদসীমার ১১৯ সোন্টিমিটার, চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ৮১ সেন্টিমিটার, নুন খাওয়া পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ১১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম-রংপুর মহাসড়কের পানি নেমে যাওয়ায় কুড়িগ্রামের সাথে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে। তবে কুড়িগ্রামের টগরাইহাট এলাকায় বন্যার পানির তোরে রেল সেতু দেবে যাওয়ায় সারা দেশের সাথে রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
অন্যদিকে কুড়িগ্রাম-ভুরুঙ্গামারী সড়ক তলিয়ে কয়েকটি পয়েন্টে ধ্বসে যাওয়ার বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে নাগেশ্বরী, ভুরুঙ্গামারী ও ফুলবাড়ী উপজেলাসহ সোনাহাট স্থল বন্দরের যোগাযোগ ব্যবস্থা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তলিয়ে যাওয়ায় বন্ধ করে দেয়া হয়েছে সাড়ে ৫ শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠন। তলিয়ে গেছে ৫০ হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন ক্ষেত। বন্যার্তদের জন্য স্বল্প পরিসরে ত্রান তৎপরতা চললেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
জেলা প্রশাসন আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খাান জানান, এ পর্যন্ত বন্যার্তদের জন্য সাড়ে ১১ লাখ টাকা ও ৫শ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।