টেস্ট ক্রিকেটে দুজনের অভিষেক কয়েক মাসের ব্যবধানে। বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের ২০০৫ সালের মে মাসে, আর ইংলিশ টেস্ট ক্যাপ্টেন অ্যালিস্টার কুকের ২০০৬’র মার্চে। তবে ইংল্যান্ড ও বাংলাদেশের ক্রিকেট কাঠামোর পার্থক্য দুজনের ক্যারিয়ার গ্রাফে গড়ে দিয়েছে বিশাল পার্থক্য।
চট্টগ্রাম টেস্টেই ইংল্যান্ডের হয়ে সবচেয়ে বেশী টেস্ট খেলার রেকর্ড গড়ছেন কুক। প্রতিপক্ষ অধিনায়ককে অভিনন্দন জানানোর সঙ্গে পর্যাপ্ত টেস্ট খেলার সুযোগ না পাওয়ার আক্ষেপ জানিয়েছেন মুশফিকুর রহিম।
তবে ক্রিকেট কাঠামোর পার্থক্য বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম এবং ইংল্যান্ডের অ্যালিস্টার কুকের ক্যারিয়ার গ্রাফে গড়ে দিয়েছে বড় পার্থক্য। দশ বছরে মাত্র ৪৮টি টেস্ট খেলেছেন মুশফিক। কুক খেলতে চলেছেন ১৩৪ নম্বর ম্যাচ।
২০০৫ এর মে মাসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লর্ডসে টেস্টে অভিষেক হয় ২৯ বছর বয়সী মুশফিকুর রহিমের। এর দশ মাস পরে ২০০৬ এর মার্চে ভারতের বিপক্ষে নাগপুরে টেস্ট ক্যারিয়ার শুরু অ্যালিস্টার কুকের। দু’জনেই ক্যারিয়ারের শুরু থেকে এক দশক ধরে পারফরম্যান্স দিয়ে দলকে দিয়ে যাচ্ছেন নির্ভরতা। তবে দু’দলের টেস্ট খেলার সুযোগ পাওয়া না পাওয়ার হিসাবে যোজন যোজন দূরে কুক এবং মুশফিক।
ইংলিশ অধিনায়ক দশ বছরে খেলেছেন ১৩৩ টেস্ট, করেছেন সাড়ে দশ হাজার রান। ঊনত্রিশ সেঞ্চুরি আর ৫১ হাফ-সেঞ্চুরিতে ইনিংস প্রতি গড় ৪৭ দশমিক তিন এক। চট্টগ্রামে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে গড়তে যাচ্ছেন ইংল্যান্ডের হয়ে সবচেয়ে বেশি টেস্ট ম্যাচ খেলার রেকর্ড।
কুকের সঙ্গে ক্যারিয়ার শুরু করেও মুশফিক এক দশকে খেলেছেন মাত্র ৪৮টি টেস্ট। তবে এক ডাবল আরো একজোড়া সেঞ্চুরিসহ ইনিংস প্রতি রান সংগ্রহে কুককে পেছনে ফেলেছেন বাংলাদেশের টেস্ট ক্যাপ্টেন।
সংবাদ সম্মেলনে মুশফিক বলেন, আমরা পনেরো মাস টেস্ট ক্রিকেট খেলি নাই এর মানে এই না যে আমরা খেলা থেকে বাইরে ছিলাম। টেস্ট ফরম্যাটে আমরা খেলতে পারি নাই, এর জন্য আমরা দায়ী না।
সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে গত বছরের আগস্টে খেলা সর্বশেষ টেস্টে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিলেও উইকেট কিপারের ভূমিকায় ছিলেন না মুশফিক। এবারো যদি দলের স্বার্থে কিপিং গ্লাভস খুলে রাখতে হয় তাতেও রাজি তিনি।
মুশফিক বলেন, ‘ উইকেটরক্ষকের দায়িত্ব পালন করে আমি ব্যাট হাতে ডাবল সেঞ্চুরিও করেছি। আবার শূন্য রানেও ফিরেছি। তাই এজন্য আমার ব্যাটিংয়ে কোনো সমস্যা হয় না। উইকেটরক্ষকের দায়িত্ব পালন করতে আমার এখন কোনো সমস্যা নেই। টিম ম্যানেজমেন্ট যদি মনে করে আমি উইকেটরক্ষকের দায়িত্ব পালন করলে দলের ভালো হবে তবে আমার সমস্যা নেই। আমি প্রস্তুত।’
উপমহাদেশীয় কন্ডিশনে বরাবরই বড় সাফল্য পাওয়ার রেকর্ড ইংলিশ টেস্ট অধিনায়কের। কুকও স্বীকার করলেন বাংলাদেশের তুলনায় ইংল্যান্ড বেশি টেস্ট খেলে বলেই তাদের পরিসংখ্যান এতটা সমৃদ্ধ।
কুক বলেন, ‘গত কয়েক বছরে খুব বেশি টেস্ট খেলার সুযোগ পায়নি বাংলাদেশ। অপরদিকে ইংল্যান্ড অনেক বেশি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশের তুলনায়।উপমহাদেশের উইকেটে সাধারণভাবেই স্পিন ধরে। প্রথম দু’দিন ব্যাটে ভালো বল আসলেও পরবর্তীতে বল খুব টার্ন করে। বাংলাদেশের বেশ ভালো স্পিনারও আছেন। তারা খুব ভালো ক্রিকেটও খেলছে দীর্ঘদিন ধরে।’
২০১০ সালে চট্টগ্রামেই বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্টে ১৭৩ রানের ইনিংস খেলেছিলেন ইংলিশ টেস্ট অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুক। সেই সাফল্যের ধারাবাহিকতার স্বপ্ন তার চোখে।