কিউবায় ‘রহস্যময় হামলা’য় মার্কিন দূতাবাসের কূটনীতিকদের অসুস্থ হয়ে যাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় দূতাবাস থেকে অর্ধেকেরও বেশি কর্মীকে দেশে ফিরিয়ে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। দূতাবাস ছাড়াও কয়েকটি হোটেলে একই ধরণের হামলার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের সব নাগরিককে কিউবা সফরে বিরত থাকতে বলেছে ওয়াশিংটন।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হেদার নওয়ার্ট জানান, গত বছরের শেষ দিকে কিউবায় থাকা মার্কিন দূতাবাসের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা হঠাৎ করেই কানে কম শুনতে থাকার খবর পাওয়া যায়। এছাড়া আরও কিছু শারীরিক সমস্যা তাদের মাঝে দেখা যেতে থাকে।
কিছুদিন পর আরও কয়েকজন মার্কিন কূটনীতিকের এ ধরণের শারীরিক সমস্যা ধরা পড়তে থাকে। এখন পর্যন্ত ২১ জনেরও বেশি দূতাবাস কর্মী মস্তিষ্কে হালকা তবে টানা যন্ত্রণা ও কানে কম শোনা থেকে শুরু করে মাথা ঘোরা ও বমিভাবসহ নানা রকম শারীরিক সমস্যার শিকার হওয়ার কথা জানিয়েছেন। এছাড়া অন্তত দু’জন কানাডীয় নাগরিক একই অসুস্থতার শিকার হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে বিবিসি।
এর ফলে গত ২৩ মে থেকে দূতাবাসের কর্মীদের একরকম জোর করে দেশে ফিরিয়ে নেয়া শুরু হয়। আর এবার অর্ধেকেরও বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানানো হলো মার্কিন সরকারের পক্ষ থেকে।
এর আগে মার্কিন গোয়েন্দারা সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন, কিউবার গোয়েন্দা সংস্থা এমন কোন শব্দতরঙ্গ যন্ত্র ওই কর্মকর্তাদের বাসায় বা কর্মস্থলের কাছাকাছি ব্যবহার করেছিল যার কারণে তাদের এমন শ্রবণ সমস্যা দেখা দিতে পারে।
সন্দেহ করা হচ্ছে, সেসব যন্ত্র থেকে বের হওয়া শব্দতরঙ্গ মার্কিন কর্মকর্তাদের দেহে শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি করেছে। প্রথম প্রথম শারীরিক সমস্যা ধরা পড়া শুরু হওয়ার পর থেকেই এই সন্দেহ করা হচ্ছিল। তবে কিউবা এ ধরণের ‘শব্দতরঙ্গ হামলা’ বা সনিক অ্যাটাক চালানোর বিষয় অস্বীকার করেছে।
মার্কিন সরকারের দূতাবাসের কর্মীদের ফিরিয়ে নেয়া এবং আমেরিকান নাগরিকদের কিউবা ভ্রমণে নিষেধ করার সিদ্ধান্তকে ‘তাড়াহুড়ো’ বলে মন্তব্য করে কিউবা বলেছে, এতে দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক প্রভাবিত হবে। তবে এরপরও পারস্পরিক সহযোগিতা চলবে বলে দেশটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন বলেছেন, দুই দেশ আগের মতোই পরস্পরকে সহযোগিতার মাধ্যমে হামলাগুলোর তদন্ত চালাবে এবং কূটনৈতিক সম্পর্কও স্বাভাবিকভাবে রক্ষা করা হবে।