জম্মু-কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং ইস্যুটি ভারতের একান্তই নিজস্ব বিষয় বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ।
শনিবার মুসলিম জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত ৫৭টি দেশ নিয়ে গঠিত সংগঠন অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি) পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ৪৬তম অধিবেশনে কাশ্মীর বিষয়ে গৃহীত প্রস্তাবনায় ভারতের কড়া সমালোচনা করলে এর প্রতিক্রিয়ায় শনিবারই এ বক্তব্য দেয় ভারত।
এর আগে শুক্রবার ওআইসি’র সভায় গিয়ে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ প্রসঙ্গে ভারতের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন সুষমা। সরাসরি নাম না নিলেও পাকিস্তানকে কড়া আক্রমণ করে সুষমা বলেন, যে সব দেশ সন্ত্রাসকে প্রশ্রয় দেয় তাদের বিরুদ্ধে অন্য দেশ গুলির ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত।
‘আমরা যদি মানবতাকে রক্ষা করতে চাই, তাহলে যে সব দেশ জঙ্গিদের আশ্রয় দেয়, অর্থ সাহায্য করে তাদের এ ধরনের কাজ করা থেকে সরে আসার বার্তা দেয়া উচিত। সন্ত্রাস এবং চরমপন্থার দু’টি আলাদা নাম আছে। কিন্তু এই দু’টিই ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা করে তৈরি হয়,’ বলেন তিনি।
বৈশ্বিক জঙ্গিবাদ রুখতে এবং গত মাসে পুলওয়ামায় সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার বাড়তে থাকা জটিলতা মোকাবেলা করতে ওআইসি’কে ভারতের সঙ্গে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানান সুষমা।
সুষমার এই ভাষণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই শনিবার কাশ্মীর প্রসঙ্গে নিজেদের একটি প্রস্তাবনা পেশ করে ওআইসি। সেখানে ভারতের কাশ্মীর নীতির কড়া সমালোচনা করে সংস্থাটি। অভিযোগ করে, ২০১৬ সাল থেকে কাশ্মীরে আরও বেশি বর্বর আচরণ করছে ভারত। এছাড়া নিজেদের বক্তব্যে ‘ভারতীয় জঙ্গিবাদ’র মতো শব্দও ব্যবহার করে তারা।
প্রস্তাবনায় ওআইসি বলে, ভারতীয় বাহিনী অকারণে কাশ্মীরিদের আটক করছে।
ভারতের সমালোচনার পাশাপাশি পাকিস্তানের প্রশংসাও করা হয় ওই প্রস্তাবনায়। ভারতীয় বায়ুসেনার উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানকে দ্রুত ফিরিয়ে দেয়ার জন্য পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের প্রশংসা করা হয় ওআইসি’র পক্ষ থেকে।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বানের জবাবে ওআইসির এমন বক্তব্যে ক্ষিপ্ত ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় থেকে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় সুষমা স্বরাজ বলেন, ‘কাশ্মীর নীতি ভারতের একান্ত নিজস্ব বিষয়। এ ব্যাপারে আমাদের অবস্থান আগের জায়গায়ই আছে আর এটা সবাই জানে। আমরা আবারও বলছি, জম্মু ও কাশ্মীর ভারতের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং এর নিরাপত্তাও ভারতের একান্তই অভ্যন্তরীণ বিষয়।’
এনডিটিভি জানিয়েছে, এবারই প্রথম ভারতকে ওআইসির এ সভায় ডাকা হয়েছিল। এরই মধ্যে জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার প্রতিশোধ হিসেবে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত আজাদ কাশ্মীরে বিমান হামলা চালায় ভারত।
এ হামলার পর ভারতকে যেন এ অধিবেশনে ডাকা না হয় সেজন্য অনেক তদবির করেছিল ইসলামাবাদ। কিন্তা সেই প্রস্তাব গৃহিত হয়নি। এর প্রতিবাদে অধিবেশনে অনুপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মামুদ কুরেশি।