ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন বিলোপসহ কঠোরতা আরোপের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। বলেছে, এর ফলে অঞ্চলটিতে মানবাধিকার পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে।
জাতিসংঘের এক মুখপাত্র কাশ্মীর জুড়ে ইন্টারনেটসহ টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ, সব ধরনের রাজনৈতিক সভা নিষিদ্ধ এবং রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের নির্বিচারে আটকের বিষয়গুলো নিয়ে বুধবার এক ভিডিওবার্তায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
টুইটারে পোস্ট করা ভিডিওবার্তায় ওই মুখপাত্র বলেন, গত ৮ জুলাই জাতিসংঘ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল ভারত সরকার ভিন্নমত স্তব্ধ করে দেয়ার উদ্দেশ্যে কীভাবে দফায় দফায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করে এসেছে, কীভাবে রাজনৈতিকভাবে ভিন্ন মতাবলম্বী নেতাদেরকে শাস্তি দিতে নির্বিচার আটক-গ্রেপ্তার চালিয়েছে এবং কীভাবে কাশ্মীরে বিক্ষোভ দমনে অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগের ফলে বহু বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও আহতের ঘটনা ঘটেছে।
একই ধরনের কর্মকাণ্ড আবারও ঘটছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। কিন্তু এবারের নিষেধাজ্ঞাগুলো অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে ‘নতুন মাত্রা’ যোগ করেছে।
জাতিসংঘ মুখপাত্র বলেন, জাতিসংঘ আবারও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থায় নিষেধাজ্ঞা আরোপের পুনরাবৃত্তি দেখছে। ‘সম্ভবত এই নিষেধাজ্ঞা আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি।’
এর ফলে জম্মু-কাশ্মীরের ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি নিয়ে জনগণ গণতান্ত্রিক আলোচনা এবং বিতর্কে মুক্তভাবে অংশগ্রহণ করতে পারবে না বলেও সতর্ক করেছেন তিনি।
“We are deeply concerned that the latest restrictions in Indian-Administered Kashmir will exacerbate the human rights situation in the region” — @UNHumanRights spokesperson
— United Nations (@UN) August 7, 2019
বিবিসি জানিয়েছে, ভারতের সংবিধানে যে অনুচ্ছেদের মাধ্যমে কাশ্মীরকে স্বায়ত্তশাসন দেয়া হয়েছিল, সেই ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলুপ্তির দু’দিন পরও কাশ্মীর পুরো বিশ্ব থেকে বিছিন্ন অবস্থায় রয়েছে।
ভারতের অন্যান্য অঞ্চলে থাকা কাশ্মীরিরা জানিয়েছেন, তারা কোনোভাবেই কাশ্মীরে থাকা তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না।
ইতোমধ্যে কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসনের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্তে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে কাশ্মীর। বিবিসি জানায়, ভারতীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে রাস্তায় নেমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কাশ্মীরিরা।
ভারতের অংশে দীর্ঘদিন ধরে বিচ্ছিন্নতাবাদী সহিংসতা চলছে, যার ফলে গত কয়েক দশকে কয়েক হাজার মানুষ মারা গেছে। বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সহায়তা করার জন্য পাকিস্তানকে সবসময়ই অভিযুক্ত করে ভারত, যা বরাবরই নাকচ করে আসছে পাকিস্তান। তবে পাকিস্তানের দাবি, তারা শুধু জম্মু-কাশ্মীরের স্বাধীনতাকামী জনগণকে নৈতিক আর কূটনৈতিক সমর্থন দিচ্ছে।