কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসনের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্তে ক্ষোভে ফুঁসে ওঠছে কাশ্মীর। ভারতীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে রাস্তায় নেমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কাশ্মীরিরা।
বিবিসি’র এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ভারতীয় সরকার সংবিধানের ৩৫-ক ধারা ও ৩৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কাশ্মীরকে দেয়া স্বায়ত্তশাসনের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের পাশাপাশি সেখানে ১০ হাজারের মতো ভারতীয় সেনা মোতায়েন, স্কুল, কলেজ, টেলিফোন এবং ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দিয়েছে।এছাড়া কিছু আঞ্চলিক রাজনৈতিক নেতাদের গৃহবন্দী করে রেখেছে।
শ্রীনগরের মেডিসিনের দোকানদার রশিদ আলী বলেন, এখানে এমনভাবে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে তাতে মনে হচ্ছে কাশ্মীর এখন উন্মুক্ত জেল।
কারফিউ চলার কারণে জনগণ বাড়ির বাইরে বের হতে পারছে না। গত সোমবারের পর থেকে কাশ্মীরের বর্তমান অবস্থা দেখতে একটি যুদ্ধক্ষেত্রের মতোই মনে হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
কাশ্মীরে অবস্থান করা বিবিসির প্রতিবেদক জানিয়েছেন, সব জায়গায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলোর সামনে পুলিশি ব্যারিকেড দেয়া হয়েছে। মার্কেট স্কুল, কলেজ সব বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। পর্যটকরা কাশ্মীর ছাড়ার চেষ্টায় আছে। পর্যাপ্ত বাস না থাকায় অনেকেই আটকা পড়েছেন।
ভারতীয় ক্ষমতাসীন পার্টি বিজেপির একজন মুসলিম রাজনীতিবিদ বলেন, ‘ভারতীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তে কাশ্মীরের জনগণ বড় ধরণের ধাক্কা খেয়েছে। মনে হচ্ছে খুব দ্রুত কাশ্মীরের জনগণের মধ্যে বিস্ফোরণ ঘটবে।’
কাশ্মীরের আরেকজন অধিবাসী আব্দুল খালি নাজার বলেন, ‘এই সিদ্ধান্ত আমরা প্রত্যাশা করিনি। এই সিদ্ধান্তের আগে কোনো আলোচনা করা হয়নি। কেন গোপনে এই পদক্ষেপ নেয়া হলো?’
সোমবার ভারতীয় পার্লামেন্টে জম্মু কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিষয়ক সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল ঘোষণার পরপরই সেখানকার দুই সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি এবং ওমর আব্দুল্লাহকে গৃহবন্দি শেষে গ্রেপ্তার করা হয়।
ভারতের সংবিধানে যে অনুচ্ছেদের মাধ্যমে কাশ্মীরকে স্বায়ত্তশাসন দেয়া হয়েছিল, সেই ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলুপ্তির দুই দিন পরও কাশ্মীর পুরো বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
কাশ্মীরের ভারতীয় অংশে দীর্ঘদিন ধরে বিচ্ছিন্নতাবাদী সহিংসতা চলছে, যার ফলে গত কয়েক দশকে কয়েক হাজার মানুষ মারা গেছে। বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সহায়তা করার জন্য পাকিস্তানকে সবসময়ই অভিযুক্ত করে ভারত, যা বরাবরই নাকচ করে আসছে পাকিস্তান।
তবে পাকিস্তানের দাবি, তারা শুধু জম্মু-কাশ্মীরের স্বাধীনতাকামী জনগণকে নৈতিক আর কূটনৈতিক সমর্থন দিচ্ছে।