উর্দুভাষী বাংলাদেশীদের নাগরিকত্ব ও ভোটাধিকার দিবস উপলক্ষে কালশী ‘গণহত্যা’ ও পল্লবী থানা হেফাজতে জনি হত্যাসহ সকল হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার, ক্যাম্পে বসবাসরত উর্দুভাষী বাংলাদেশী নাগরিকদের মর্যাদাপূর্ণ স্থায়ী পুনর্বাসন ও পুনর্বাসন না হওয়া পর্যন্ত ক্যাম্পে সরকারি সুযোগ সুবিধা বহাল রখার দাবিতে উর্দু স্পীকিং পিপলস্ ইউথ রিহ্যাবিলিটেশন মুভমেন্ট (ইউ.এস.পি.ওয়াই.আর.এম) এর উদ্যোগে রাজধানীর মিরপুরে নাগরিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নাগরিক সমাবেশে বক্তারা বলেন, “কালশী গণহত্যার দুই বছর হতে চলেছে। জায়গা দখলের উদ্দেশ্যে পুলিশের সামনে একটা নিরীহ পরিবারের ৯ জনকে ঘরের দরজায় তালা মেরে হত্যা করলো স্থানীয় সাংসদের সন্ত্রাসী বাহিনী। আগুন নেভাতে গেলে পুলিশ একজনকে গুলি করে হত্যা করলো। এই বর্বর ঘটনার স্পষ্ট ভিডিও ফুটেজ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে দেওয়া হলেও আজ পর্যন্ত একজন হত্যাকারীকেও গ্রেফতার করা হয়নি। তার মানে সরকার কি তাহলে এই হত্যাকাণ্ডের বিচারে আন্তরিক নয়?”
বক্তারা অবিলম্বে কালশী গণহত্যা ও পল্লবী থানা হেফাজতে জনি হত্যাসহ সকল হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচারের জোর দাবি জানিয়ে বলেন,“ক্যাম্প থেকে অবৈধভাবে উচ্ছেদ করে ক্যাম্পের জায়গা দখলের জন্য স্থানীয় সন্ত্রাসী ও লুটেরা গোষ্ঠী বার বার উর্দুভাষীদের উপর জুলুম-নির্যাতন চালাচ্ছে। শুধু তাই নয় বিভিন্ন সময়ে নিরীহ উর্দুভাষীদের হত্যাও করা হচ্ছে।”
বক্তারা উর্দুভাষীদের উপর নির্যাতন ও হয়রানির প্রতিবাদ জানিয়ে সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, “আর এদের নিয়ে ছিনিমিনি খেলবেন না। এবার প্রতিশ্রুতি নয় সত্যিই এই অবহেলিত জনগোষ্ঠীকে মর্যাদাপূর্ণ স্থায়ী পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় এরা যেখানে আছে সেখানেই বাধাহীনভাবে থাকতে দিন।”
ইউ.এস.পি.ওয়াই.আর.এম এর সভাপতি সাদাকাত খান ফাক্কুর সভাপতিত্বে নাগরিক সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাবেক সাংসদ ও নাগরিক ঐক্যের প্রধান উপদেষ্টা এস. এম. আকরাম, বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান ভূঁইয়া, নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক শহীদুল্লাহ কায়সার, ইউ.এস.পি.ওয়াই.আর.এম-এর সাধারণ সম্পাদক শাহীদ আলী বাবলু, ওয়েল ফেয়ার মিশন অফ বিহারিজ এর সভাপতি মোস্তাক আহাম্মেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক শাকিল, যুগ্ম-সাংগঠনিক সম্পাদক মনজুর রেজা খান, নাগরিক ছাত্র ঐক্যের আহ্বায়ক নাজমুল হাসান, উর্দুভাষী ছাত্র আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইমরান খান, সিনিয় সহ-সভাপতি নাহিদ পারভিন ও মাকসুদ আলম প্রমুখ।
২০০৮ সালের ১৮ মে বাংলাদেশে বিভিন্ন ক্যাম্পে বসবাসরত প্রায় ৪ লক্ষ উর্দুভাষীদের নাগরিকত্ব নিশ্চিত করে ভোটাধিকার ও জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানের এক ঐতিহাসিক রায় দেন মহামান্য হাইকোর্ট। দীর্ঘ ৩৭ বছর পর সকল নাগরিক অধিকার থেকে সম্পূর্নরূপে বঞ্চিত, বৈষম্য ও নির্যাতনের শিকার এই জনগোষ্ঠী ভোটাধিকার অর্জন করে।