মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদের আপিলের রায়ের অপেক্ষায় বাংলাদেশ। আপিল বিভাগের মঙ্গলবারের কার্যতালিকার এক নম্বরে আছে তার আপিলের রায়।
রায়ে মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকলে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে তিনি রিভিউ আবেদনের সুযোগ পাবেন। সেটাও প্রত্যাখ্যাত হলে কাদের মোল্লা এবং কামারুজ্জামানের মতো মুজাহিদের ঠিকানাও হবে ফাঁসির মঞ্চ।
আপিল শুনানির পর প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চ গত ২৭ মে জানান, রায় ঘোষণা হবে ১৬ জুন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে তার আপিলের ক্ষেত্রেই প্রথমবারের মতো রায়ের দিন-তারিখ ঠিক করে দেন আপিল বিভাগ। বেঞ্চের অন্য তিন সদস্য হলেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহবুব হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
২০১৩ সালের ১৭ জুলাই মানবতাবিরোধী অপরাধে মুজাহিদকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। ওই বছরের ১১ আগষ্ট রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন মুজাহিদ।
সাত অভিযোগের মধ্যে পাঁচটি প্রমাণ হওয়ায় আর তিনটিতে ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদণ্ড দেওয়ায় রাষ্ট্রপক্ষ আর আপিল করে নি। তবে কেনো মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা উচিত শুনানিতে তার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
সর্বোচ্চ আদালতের রায়েও মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকবে বলে আশা করছেন এটর্নি জেনারেল।
ট্রাইব্যুনালের রায় বহাল রেখে দ্রুততম সময়ে মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দাবিতে আপিল বিভাগের রায় ঘোষণার আগের বিকেল থেকেই শাহবাগে অবস্থান নিয়েছে গণজাগরণ মঞ্চ। বৃষ্টির মধ্যেও শাহবাগে অবস্থান নিয়ে নেতা-কর্মীরা মুজাহিদের ফাঁসির দাবিতে স্লোগান দিচ্ছেন।
বুদ্ধিজীবী হত্যায় সহযোগিতা ও পরিকল্পনা, সাংবাদিক সিরাজুদ্দিন হোসেনকে অপহরণ ও হত্যা এবং ফরিদপুরের বকচর গ্রামে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ওপর হামলা চালিয়ে হত্যা ও নির্যাতনের মতো অপরাধে ট্রাইব্যুনাল তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন।
এছাড়াও সুরকার আলতাফ মাহমুদ, বিচ্ছু জালাল, শাফী ঈমাম রুমি এবং বদিউজ্জামানসহ কয়েকজনকে নাখালপাড়ার পুরনো এমপি হোস্টেলে আটকে রেখে নির্যাতনের অপরাধে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে বিচ্ছু জালাল ছাড়া অন্যদের হত্যার ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পান ট্রাইব্যুনাল।
২০১০ সালের ২ আগস্ট মানবতাবিরোধী অপরাধে মুজাহিদকে গ্রেফতার দেখানো হয়। এর আগে ওই বছরের ২৯ জুন তাকে গ্রেফতার করা হয় ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে। মানবতাবিরোধী অপরাধে তার বিচার শুরু হয় ২০১২ সালে ২১ জুন।