ড. কামাল হোসেন-তারেক রহমানদের সকল ষড়যন্ত্র চুরমার করে আওয়ামী লীগ বাঙালি জাতিকে তার অভিষ্ট লক্ষে পৌঁছে দেবে বলে মন্তব্য করেছেন ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক৷
মঙ্গলবার ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি-সেক্রেটারি, ঢাকা মহানগর উত্তর দক্ষিণের সভাপতি সেক্রেটারি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের প্রেসিডেন্ট সেক্রেটারি’র সঙ্গে ছাত্রলীগের দায়িত্ব প্রাপ্ত নেতাদের জরুরি বৈঠক শেষ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
নানক বলেন: জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ যখন এগিয়ে যায়, তখন জনভিত্তিহীন কিছু মানুষ ষড়যন্ত্র শুরু করে। ড. কামাল হোসেন সাহেবের মত মানুষ, বার্গম্যানদের মত মানুষ, তারেক রহমানদের মত মানুষ জনসমর্থন হারিয়ে এদেশের মানুষের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। যখন বড় বড় কথা বলেন, তখন তারা ভুলে যান; এই কামাল হোসেন সাহেবও কালো টাকা সাদা করেছেন।
৭৫ পরবর্তী কামাল হোসেনের ভূমিকার সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের এ সিনিয়র নেতা বলেন: পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট যখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়, দেশে না থাকায় তার কন্যা বর্তমানে বাংলাদেশের সফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহেনা বিদেশে থাকায় বেঁচে যান; তখন তার রক্তের উপর দাঁড়ানো খুনি মোস্তাক-জিয়ার সরকারের এই ড. কামাল হোসেন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি একটি নিন্দাও জানাননি, এমনকি ওই অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা দেখানোর মতো সৎ সাহস দেখাননি।
এসময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এ সদস্য সতর্ক বার্তা উচ্চারন করে বলেন: যারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চান, ষড়যন্ত্র করতে চান বিরাজনীতিকরণ করতে চান; তাদেরকে আমরা বলতে চাই-বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অত্যন্ত সতর্ক আছে। আমরা বলতে চাই, দাঁত ভাঙ্গা জবাব দেওয়া হবে। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাঙালি জাতিকে এগিয়ে নিতে যত প্রতিবন্ধকতায় আসুক না কেন, তার ভেঙ্গে চুরমার করে সামনের দিকে আমরা বাঙালি জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাব।
এসময় দলের প্রবীণ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী ছাত্রলীগের করোনা মহামারি’র এ সময়ে কর্মকাণ্ডের প্রসংশা করেন। তিনি ৭০’র মতো গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনের সময় দেশে হয়ে যাওয়া প্রলয়নকালী ঘূর্ণিঝড়ের সময় , বঙ্গবন্ধুর নির্বাচনী প্রচারণা বন্ধ করে দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর উদাহরণ তুলে ধরেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ছাত্রলীগকে আর্ত মানবতার সেবায় কাজ করে যাওয়ার নির্দেশন দেন আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান এ নেতা।
আওয়ামী লীগের আরেক সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান বলেন: বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নিকট অতীতে যেভাবে আমাদের মুগ্ধ করেছে, আমরা প্রত্যাশা করি সমানের দিন গুলোতেও তারা মানবিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত রাখার মধ্যদিয়ে এগিয়ে যাবে। সংগঠনকে শক্তিশালী করবে।
মানবিক কারণে এবং ঈদুল আজহা উদযাপনের জন্য চলমান ‘কঠোর লকডাউন’ সরকার ১৫ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত শিথিল করা হয়েছে বলে জানান তিনি। এসময়ে দেশবাসীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদ উদযাপনের আহ্বান জানান রহমান।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহউদ্দিন নাছিম বলেন: এই কঠিন সময়ে ছাত্রলীগ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে, সেই ধারাবাহিকতাকে সামনে রেখে বিশেষ করে বন্যার ঘনঘটা শুরু হচ্ছে, এসময় ছাত্রলীগ মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে।
তিনি আরও বলেন: পবিত্র ঈদ উল আজহাকে সামনে রেখে জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে লকডাউন শিথিল করা হয়েছে। অতীতে ছাত্রলীগ যেভাবে কাজ করেছে, লকডাউন যখন শিথিল হচ্ছে তখনও ছাত্রলীগ যাতে তৃণমূল পর্যায়ে মানুষকে সচেতন করে, মানুষকে যাতে ক্ষুধার কষ্ট পেতে না হয় সেজন্য দুস্থ মানুষদেরকে সহযোগিতা করবে ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগ সারাদেশে তৃণমূল পর্যায় থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত সকলকে সাথে নিয়ে মানুষকে সচেতন করবে, সহযোগিতা করবে।
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন: ২৩ তারিখ থেকে যে কঠোর লকডাউন পরিকল্পনা আছে তা সফল করার জন্য সর্বস্তরের মানুষ যাতে সরকারকে সহযোগিতা করে এবং করোনার হাত থেকে ও করোনার ভয়াবহতা থেকে সকলকে সচেতন করার জন্য এ সময় ছাত্রলীগ সারাদেশে মানবিক কর্মকাণ্ড নিয়ে এগিয়ে যাবে। করোনা যতদিন থাকবে ততদিন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এই দায়িত্বশীল কাজ পালন করবে তার পরিকল্পনা নিয়ে আজ আলোচনা হয়েছে। আমরা আশা করি ছাত্রলীগ যোগ্য ও বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দিয়ে, সাহসিকতার, সততা ও শৃঙ্খলা দিয়ে যে কোন ষড়যন্ত্রের রাজনীতি, অপরাজনীতি মোকাবেলা করে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবে।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল, অ্যাডভোকেট আফজাল হোসন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃনাল কান্তি দাস, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় সদস্য ইকবাল হোসেন অপু এমপি, শাহাবুদ্দিন ফরাজি, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ অনেকে।