দেশে প্রথমবারের মতো ‘কাপ-আমব্রেলা’ নামে বৃহদাকার ছাতাকৃতির এক বিশেষ সুস্বাদুর মাশরুম ফলাতে সক্ষম হয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন।
কৃত্রিম উপায়ে মাশরুমটি ফলনে দেশে প্রথমবারের মতো তিনি সফল হন বলে জানা যায়। এর আগে তিন কেজি ষোল গ্রাম ওজনের বৃহৎ মাশরুম উৎপাদনে সফল হন।
উৎপাদিত এই মাশরুমটি তাইওয়াান, চীন, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইনে ‘কাপ-আমব্রেলা’ এবং বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলের আদিবাসীদের কাছে ‘পেয়ালা-ছাতা’ মাশরুম নামে পরিচিত।
দীর্ঘ তিন বছর ধরে গবেষণার পর আনোয়ার হোসেন তার নিজস্ব ফার্মে অতি সাধারণ নীল পলিথিনে নির্মিত গ্রীন হাউজে এই মাশরুম ফলাতে সক্ষম হন।
মাশরুমটি প্রাইমর্ডিয়া বা কুঁড়ি অবস্থায় লালচে বাদামী, পরে ক্রমশ ক্রিম-সাদা রং ধারণ করে।
মাশরুমের ছাতাটির ব্যাস ১০ থেকে ৩৫ সে.মি.। এর স্টাইপ বা ছাতার দন্ড ৭ থেকে ১০ সে.মি. এবং প্রস্থে ১ থেকে ১.৫ সে.মি.হয়ে থাকে। ছাতা বা পাইলিয়াস প্রথমে চোঙ্গাকার পরে পেয়ালাকৃতির, পরিণত দশায় ছত্রাকার এবং প্রান্ত বরাবর প্রায় সমান্তরাল, কিনারা সামান্য বাঁকানো, মসৃন ত্বকযুক্ত হয়।
ছাতার নিচের গিল প্রথমে দুধ-সাদা এবং পরিণত অবস্থায় হালকা বাদামী বর্ণের সংমিশ্রন ঘটে। স্টাইপ বা ছাতার দন্ডটি লালচে-বাদামী বর্ণের সংমিশ্রণ পরিলক্ষিত হয়।
একটি পরিণত মাশরুম নিশ্চিত আপনাকে বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা করবে। তবে ছাতার কেন্দ্রে কাপ বা পেয়ালার মতো গর্ত আছে। অর্থাৎ যা পেয়ালা তাই ছাতা। এজন্যই বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলের আদিবাসীদেও কাছে এটি পেয়ালা-ছাতা মাশরুম নামে পরিচিত।
এই মাশরুমটির উপকারিতা সম্পর্কে গবেষক আনোয়ার হোসেন চ্যানেল আই অনলাইনকে জানান, ‘পেয়ালাকৃতির এই মাশরুমে পর্যাপ্ত আমিষ, চর্বি, আঁশ, শর্করা, ভিটামিন, ফেনল, এন্টি-অক্সিড্যান্ট এবং ফ্লেবনয়েড থাকে। মাশরুমটির অন্যতম বিশেষত্ত্ব হচ্ছে এর মধ্যে থাকা ক্লাইটোসিন নামক এন্টিবায়োটিক।
গত দশ বছর যাবৎ গবেষণা করে তিনি মাশরুমের বিভিন্ন জাতের উন্নত ফলন ঘটাতে সক্ষম হয়েছেন। এ ছাড়াও পাহাড়ি অঞ্চলে প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো বিভিন্ন মাশরুম নিয়েও কাজ করছেন এই গবেষক ও মাশরুম উদ্যোক্তা।