মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের নেতা অং সান সু চির সম্মানসূচক নাগরিকত্ব প্রত্যাহার করেছে কানাডা। রাখাইনে রোহিঙ্গা নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আনুষ্ঠানিকভাবে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে কানাডার পার্লামেন্ট।
দেশটির সিনেট ও হাউজ অব কমন্সের ভোটে শান্তিতে নোবেল জয়ী সু চির নাগরিকত্ব বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সু চিই প্রথম ব্যক্তি যার নাগরিকত্ব বাতিল করলো কানাডা। এছাড়াও এর আগে একই ইস্যুতে বেশ কয়েকটি শহর এবং প্রতিষ্ঠান সু চিকে দেয়া সম্মাননা প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
১৯৭৭ সালে কানাডার পার্লামেন্ট অং সান সু চিকে সম্মানসূচক নাগরিকত্ব দিয়েছিল। সেই সময়কার কনজারভেটিভ প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন হারপার নিজে সংসদে প্রস্তাবটি তুলেছিলেন।
রাখাইনের ঘটনা অনুসন্ধান করে এক প্রতিবেদনে জাতিসংঘ জানিয়েছে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী কয়েক হাজার রোহিঙ্গাকে হত্যা, ধর্ষণ এবং কয়েকশ’ গ্রাম পুড়িয়ে দিয়ে জাতিগত নিধন চালায়।
গত আগস্টে প্রকাশিত জাতিসংঘের একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ‘গণহত্যার উদ্দেশ্য নিয়ে’ ব্যাপক পরিসরে হত্যাকাণ্ড চালানোর অভিযোগ আনে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, সেনাবাহিনীর এই নৃশংস ধ্বংসযজ্ঞ থেকে বাঁচতেই ৭ লাখেরও বেশি (বাংলাদেশ সরকারের হিসেবে ১১ লাখের কাছাকাছি) রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে।
বর্মি সেনাবাহিনীর এ ধরনের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া তো দূরের কথা, এ বিষয়ে প্রথম দিকে একেবারেই উচ্চবাচ্য করেননি সু চি। পরে যতবার কথা বলেছেন, পক্ষ নিয়েছেন সামরিক বাহিনীরই।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে এ ধরনের ভূমিকায় বিশ্বজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন সু চি। সমালোচনা ও নিন্দার এক পর্যায়ে তার নোবেল শান্তি পুরস্কার ফিরিয়ে নেয়ার দাবি ওঠে।