কানাডায় বড়দিনের আনন্দকে আবারও ম্লান করে দিয়েছে ওমিক্রনের সংক্রমণ। সরকারি বিধিনিষেধ আর সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে গিয়ে কানাডিয়ানরা এ বছরও জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালন করতে পারছেন না এই দিনটি।
কানাডায় খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় অনুষ্ঠান ‘বড়দিন’ বা ‘ক্রিসমাস ডে’। দিনটিকে ঘিরে চলে নানা আয়োজন। আগে থেকেই বিভিন্ন অফিসে ও বাসা-বাড়িতে শুরু হয় পার্টি। ইতিমধ্যেই আলোক সজ্জায় সজ্জিত হয়েছে অফিস আদালত, বড়দিনের উপহার সামগ্রীর কেনাকাটায় বিভিন্ন মলে তুলনামূলকভাবে গতবছরের তুলনায় বেশি ভিড় দেখা গেছে। পরিবহন গুলিতেও লেখা হয়েছে “হ্যাপি হলিডে”।
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও হঠাৎ ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের কারণে গত সোমবার থেকে কানাডার কুইবেক প্রদেশে স্কুল, বার, জিম এবং সিনেমা থিয়েটার বন্ধ করে দিয়েছে। অন্যদিকে থার্টি ফার্ষ্ট নাইটে টরন্টোর প্রবাসী বাংলাদেশিদের অন্তত তিনটি বড় ধরনের আয়োজন ছিলো। টিকেটও বিক্রি হয়েছিল। কিন্তু অন্টারিওর প্রভিন্সিয়াল সরকার নতুন করে কিছু বিধি নিষেধ আরোপ করায় তা বাতিল করা হয়েছে।
কেবল বাংলাদেশী কমিউনিটি নয়, পুরো অন্টারিও, কুইবেক আরোসহ বেশ কয়েকটি প্রভিন্সও একই পথ ধরেছে। ফেডারেল সরকার জরুরী না হলে দেশের বাইরে কোথাও না যেতে নাগরিকদের পরামর্শ দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো স্পষ্ট করে বলেছেন, কোথাও যাওয়ার সময় এটা না।
অন্টারিও সায়েন্স টেবল ওমিক্রন নিয়ে যে মডেলিং করেছে তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, কোনো পদক্ষেপ না নিলে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে কেবল অন্টারিও প্রভিন্সেই ৬০০ ব্যক্তিকে আইসিইউতে ভর্তি করতে হবে। হিসাব করে দেখা গেছে, কানাডায় নতুন যারা সংক্রমিত হচ্ছেন তাদের ৫০ শতাংশই ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ। প্রতি ২.৮ দিনে সংক্রমণের হার দ্বিগুন হয়ে গেলে মোট কোভিড রোগীর পরিমান কী হবে তা নিয়েই সরকার উদ্বিগ্ন।
অন্যদিকে অন্টারিও প্রভিন্সিয়াল সরকারের নতুন নির্দেশনা কার্যকর হয়েছে। নতুন নির্দেশনা অনুসারে ইনডোরে ১০ জনের বেশি লোক সমাগম করা যাবে না। শপিং মল, গ্রোসারি স্টোর, রেস্টুরেন্টে ক্যাপাসিটির অর্ধেক লোককে ঢুকতে দেয়া যাবে।
বড়দিনের ছুটিতে যাতে ওমিক্রনের সংক্রমণ অতিমাত্রায় না ছড়ায়, সেজন্যই এই আগাম সতর্কতা, আগাম প্রস্তুতি। ইতোমধ্যে অনেকেই তাদের নির্ধারিত ভ্রমণ বাতিল করেছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার কারণে গুরুতর অসুস্থতা ঠেকাতে এই পদক্ষেপের কোন বিকল্প নেই। কানাডিয়ানরা মনে করেন, করোনার এই মুহূর্তে সুস্থভাবে বেঁচে থাকাই সবচেয়ে বড় কথা। বেঁচে থাকলে বড়দিন আবার আসবে।