রাজধানীর কল্যাণপুরে এক জঙ্গি আস্তানায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে ৯ জঙ্গি নিহত ও পুলিশ সহ কয়েকজন আহত হয়েছে। আজ ভোর পোনে ছয়টা থেকে পুলিশ অপারেশন ‘স্টর্ম টোয়েন্টি সিক্স’ নামে এই অভিযান চালায়। এক ঘণ্টাব্যাপী অভিযানে সোয়াতও অংশ নেয় । পুলিশ বলছে, গুলশান হামলার সঙ্গে এরা জড়িত ছিল। পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করেছে।
অভিযান শেষে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) শহীদুল হক বলেন, নিহত ব্যক্তিরা নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সদস্য। তিনি বলেন, ওই বাড়ি থেকে বড় হামলার পরিকল্পনার তথ্য পুলিশের কাছে আগে থেকেই ছিল।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার শেখ মারুফ হাসান জানান, এক ঘণ্টা ধরে পুলিশ ‘অপারেশন স্টর্ম ২৬’ নামের এই অভিযান চালায়। পুলিশের সঙ্গে স্পেশাল উইপনস অ্যান্ড ট্যাকটিকস (সোয়াট), র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি), ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল ও বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল অভিযানে অংশ নেয়।
পুলিশ জানায়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দেশের বিভিন্ন জায়গায় চলা অভিযানের অংশ হিসেবে গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে পুলিশ জাহাজ বিল্ডিং নামের ওই ছয়তলা বাড়িটিতে যায়। তিনতলা পর্যন্ত ওঠার পর ওপর থেকে দুজন ‘আল্লাহু আকবর’ বলে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ও বিস্ফোরকদ্রব্য ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। এতে হাসান নামের একজন আহত হন। পুলিশের দাবি, হাসান একজন ‘জঙ্গি’। তাকে রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
প্রথম দফায় রাত দেড়টা পর্যন্ত পুলিশের সঙ্গে ‘জঙ্গিদের’ গুলিবিনিময় চলে। খবর পেয়ে সোয়াট, র্যাব ও ডিবি ঘটনাস্থলে যায়। এরপরে রাত সাড়ে তিনটার দিকে আরেক দফা গুলিবিনিময় চলে। সকাল পাঁচটা ৫০ থেকে পুলিশ অভিযান শুরু করে। পুলিশ জানায়, একপর্যায়ে ‘জঙ্গিরা’ দরজা খুলে পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। গুলিবিনিময়ে নয়জন নিহত হয়।
সকাল আটটার দিকে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) শহীদুল হক ঘটনাস্থলে যান। তিনি জানান, একজনকে আটক করা হয়েছে। নিহত নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির সদস্য বলে তারা মনে করছেন। ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার (ডিএমপি) মো. আছাদুজ্জামান মিয়াও ঘটনাস্থলে গেছেন।
অভিযানের সময় পুলিশ ওই এলাকা ঘিরে ফেলে। যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ওই বাসায় পুলিশের তল্লাশি চলছে।