চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

কলঙ্কমুক্ত হলেন আমেরিকার কথিত ‘প্রথম’ এইডস রোগী

মৃত্যুর অনেক বছর পর, বিশ্বের অন্যতম প্রধান আলোচিত-সমালোচিত রোগী, গেটান ডুগাসকে অবশেষে কলঙ্ক মুক্ত করেছে বিজ্ঞান।

‘পেশেন্ট জিরো’ নামে পরিচিত সাবেক এই সমকামী বিমান কর্মী প্রথম যুক্তরাষ্ট্রে এইডস ভাইরাস ছড়িয়ে ছিলেন বলে অপবাদ দেয়া হয়েছিল। যে কোনো বড় সংক্রামক রোগের ক্ষেত্রে প্রথম যে ব্যক্তি আক্রান্ত হয় তাকে পেশেন্ট জিরো (Patient Zero) বলে আখ্যায়িত করা হয়।

তবে এক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা বলছেন, ওই সময় ডুগাসের সঙ্গে আমেরিকায় আরও কয়েক হাজার মানুষ এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন।

‘নেচার’ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ১৯৭০-এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রে যে কয়েক হাজার মানুষ এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি ছিলেন তাদের মধ্যে একজন। প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, ওই সময় নিউইয়র্ক ছিল এইচআইভি ছড়ানোর অন্যতম একটি স্থান।

১৯৮১ সালে সমকামী পুরুষদের মধ্যে অস্বাভাবিক কিছু নমুনা ধরা পড়ার সময় পরীক্ষার মাধ্যমে প্রথম এইডস রোগটি সনাক্ত হয়।

তবে এবার ইউনিভার্সিটি অব অ্যারিজোনার একটি গবেষক দল ৭০-এর দশকে হেপাটাইটিস পরীক্ষার জন্য সংরক্ষিত রক্তের নমুনা যাচাই করে সেগুলোর বেশ কিছুতে এইচআইভির উপস্থিতি সনাক্ত করেছে।

দলটির গবেষকরা রক্ত থেকে ভাইরাসের জিনেটিক কোড পুনর্গঠনের নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন। সেই পদ্ধতি প্রয়োগ করে নিউইয়র্ক ও স্যান ফ্রান্সিসকোর ২ হাজার নমুনা পরীক্ষার পর ৮টিতে এইচআইভি’র পূর্ণাঙ্গ জিনেটিক কোড উদ্ধার করতে সফল হন।

৭০-এর দশকে নিউইয়র্ক ছিল এইচআইভি ছড়ানোর অন্যতম কেন্দ্র
৭০-এর দশকে নিউইয়র্ক ছিল এইচআইভি ছড়ানোর অন্যতম কেন্দ্র

এই সাফল্য থেকে বিজ্ঞানীরা খুঁজে বের করতে সমর্থ হন নিউইয়র্কে এইচআইভি আসলে কখন অনুপ্রবেশ করেছিল।

গবেষক দলের অন্যতম সদস্য ড. মাইকেল ওয়ারোবি বলেন, নমুনাগুলোতে জিনগত বৈচিত্র্য এতই বেশি যে সেগুলো ৭০-এর দশকের শেষদিকের হওয়া অসম্ভব। যুক্তরাষ্ট্রে এইচআইভি’র আসার সময় অবশ্যই ১৯৭০ বা ১৯৭১ বলে চিহ্নিত হয়েছে বলে জানান তিনি।

এরপর গবেষকরা ‘পেশেন্ট জিরো’ খ্যাত ডুগাসের রক্তের এইচআইভি ভাইরাসের জিনেটিক কোড বিশ্লেষণ করেন। বিশ্লেষণে স্পষ্টভাবেই বেরিয়ে আসে, ডুগাসের রক্তে থাকা ভাইরাস থেকে আক্রান্ত বাকি রোগীদের দেহে ভাইরাস যায়নি।

গেটান ডুগাস ১৯৮৪ সালে মারা যান। ইতিহাসে তার নাম ‘পেশেন্ট জিরো’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। নতুন গবেষণার ফল সেই অপবাদ থেকে মৃত্যুর ৩২ বছর পর ডুগাসকে মুক্ত করল।