নিয়মিত কর দেয়ার জন্য এই প্রথমবারের মতো দেশের ৮৬ পরিবারকে ‘কর বাহাদুর’ খেতাব দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সারাদেশে আয়কর পরিশোধে জনগণকে উৎসাহ দিতে ও করদাতার সংখ্যা বাড়াতেই এই সম্মাননা দেয়া হয়।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্মাণাধীন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ভবনে সাত দিনের আয়কর মেলা শেষে বুধবার তাদের এই সম্মাননা দেয়া হয়।
এর আগে সারাদেশে যেসব করযোগ্য পরিবারের সদস্যরা দীর্ঘ সময় ধরে কর দিয়ে আসছেন তাদের তালিকা সংগ্রহ ও যাচাই করে এই ৮৬টি পরিবারকে সনাক্ত করেছে এনবিআর। এসব কর বাহাদুরগণ গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক ব্যক্তি বা সিআইপির মর্যাদা পাবেন।
অনুষ্ঠানে কর বাহাদুরদের হাতে এই বিশেষ সম্মাননা তুলে দেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, অর্থমন্ত্রণালয় সর্ম্পকিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান ও এফবিসিসিআইর সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন প্রমুখ।
নিয়মিত করদাতাদের ‘কর বাহাদুর’ খেতাব দিয়ে চলতি বছরের ১ জুন জাতীয় সংসদে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেট পেশ করার সময় পুরস্কৃত করার প্রস্তাব দেন অর্থমন্ত্রী। ওই সময় তিনি বলেছিলেন: যে পরিবারের সব সদস্য কর দেন এবং দীর্ঘদিন ধরে কর দেন তাদের আমি ‘কর বাহাদুর’ খেতাব দেয়ার প্রস্তাব করছি। বুধবার এই খেতাব দেয়ার মধ্য দিয়ে অর্থমন্ত্রীর সেই প্রস্তাবের বাস্তবায়ন ঘটলো।
কর বাহাদুর পদক পেলেন যারা
এ তালিকার মধ্যে ঢাকায় রয়েছে ১৬ পরিবার। যার মধ্যে রয়েছে খাজা তাজমহল ও তার পরিবার, এবিএম শফিউল আলম ও তার পরিবার, লতিফুর রহমান ও তার পরিবার, সৈয়দ হাসান ইমাম ও তার পরিবার, কুতুব উদ্দিন আহমেদ ও তার পরিবার, আবদুস সালাম মুর্শেদী ও তার পরিবার, আবদুল কাদের মোল্লা ও তার পরিবার, হাজী মো. কাউছ মিয়া ও তার পরিবার, সৈয়দ আবুল হোসেন ও তার পরিবার, আবদুল হক ও তার পরিবার, সৈয়দ নূরুল ইসলাম ও তার পরিবার, আহমেদ আকবর সোবহান ও তার পরিবার, একেএম রহমতুল্লাহ ও তার পরিবার, আবদুল মাতলুব আহমেদ ও তার পরিবার।তালিকায় চট্টগ্রামে রয়েছেন আট পরিবার। তারা হলেন- আলী হোসাইন আকবর আলী ও তার পরিবার, আবুল হাশেম, একেএম শামসুদ্দীন খান, ফরিদ আহমেদ, জোহাইর তাদের আলী, নুরুল ইসলাম বিএসসি, মো. এম জালাল উদ্দিন চৌধুরী, নুর নাহার জামান ও তার পরিবার।
এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জে জসিম উদ্দিন মাসুম ও তার পরিবার, মুন্সীগঞ্জে মজিবুর রহমান, মানিকগঞ্জে সৈয়দ সোহেল ইমাম, গাজীপুরে প্রফেসর আবদুল বারী, টাঙ্গাইলে যুগলপদ শাহা, নরসিংদীতে মাঞ্জু মিয়া, ময়মনসিংহে আব্দুর রশিদ, কিশোরগঞ্জে ভাস্কর কুমার দত্ত, শেরপুরে জয়নাল আবেদীন, নেত্রকোনায় পিযূষ কান্তি ভৌমিক, জামালপুরে মির্জা আযম, ফরিদপুরে অ্যাডভোকেট রবীন্দ্রনাথ সাহা ও তার পরিবার, রাজবাড়ীতে জিল্লুল হাকিম ও তার পরিবার, গোপালগঞ্জে কাজি শওকত আলী ও তার পরিবার, মাদীপুরে শাহজাহান খান ও তার পরিবার, শরীয়তপুরে ডা. মো. মনিরুজ্জামান ও তার পরিবার, কক্সবাজারের মো. মোস্তফা ও তার পরিবার।
বান্দরবানে মাহবুবুর রহমান ও তার পরিবার, সিলেটে ফজলে হাসান ফেরদৌস ও তার পরিবার, মৌলভীবাজারে মতলুব খান ও তার পরিবার, হবিগঞ্জে সুখলাল সূত্রধর ও তার পরিবার, সুনামগঞ্জে আজিজুর রহমান ও তার পরিবার, কুমিল্লায় আফজাল খান ও তার পরিবার, নোয়াখালীতে আবুল খায়ের ও তার পরিবার, লক্ষীপুরে আবু ছায়েদ ও তার পরিবার, ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় মো. হেলাল উদ্দিন ও তার পরিবার, চাঁদপুরে আবদুল মান্নান খান ও তার পরিবার, ফেনীতে নুর জাহান বেগম ও তার পরিবার।
রাজশাহীতে আব্দুল গাফফার ও তার পরিবার, পাবনায় স্যামুয়েল এস চৌধুরী ও তার পরিবার, নাটোরে কাইয়ূম খান ও তার পরিবার। নওগাঁয় শেখ আজাদ হোসেন ও তার পরিবার, চাঁপাইনবগঞ্জে এফ কে এম লুৎফর রহমান ও তার পরিবার, বগুড়া মতিয়ার রহমান ও তার পরিবার, সিরাজগঞ্জে সানোয়ার হোসেন ও তার পরিবার, গাইবান্ধায় আবদুল লতিফ হাক্কানী ও তার পরিবার, জয়পুরহাটে আবদুল হাকিম মণ্ডল ও তার পরিবার।
রংপুরে মহুবর রহমান ও তার পরিবার, দিনাজপুরে আকিল আহমেদ ও তার পরিবার, ঠাকুরগাঁওয়ে মোকসেদুল আলম ও তার পরিবার, পঞ্চগড়ে শফিক হোসেন ও তার পরিবার, নীলফামারীতে ওহিদুল হক ও তার পরিবার, লালমনিহাটে ফজলুল হক ও তার পরিবার, কুড়িগ্রামে মো. মইজ উদ্দিন ও তার পরিবার, বরিশালে আবদুর রাজ্জাক ও তার পরিবার, ঝালকাঠিতে সালাউদ্দিন আহমেদ ও তার পরিবার।
পিরোজপুরে মজিবুর রহমান খালেক ও তার পরিবার, পটুয়াখালীর মো. শাহজাহান মিয়া ও তার পরিবার, ভোলায় সানা উল্লাহ ও তার পরিবার, বরগুনায় হেনেরা বেগম ও তার পরিবার, খুলনায় এমএম এ সালাম ও তার পরিবার, যশোরে শফিউর রহমান মল্লিক ও তার পরিবার, চুয়াডাঙ্গায় রকিবুল ইসলাম ও তার পরিবার, মাগুরা মো. রজব আলী মজনু ও তার পরিবার, সাতক্ষীরায় গোলাম রব্বানী ও তার পরিবার, নড়াইলে ওয়াহিদুজ্জামান ও তার পরিবার, কুষ্টিয়ায় মজিবর রহমান ও তার পরিবার, ঝিনাইদহে দুলাল কুমার চক্রবর্তী ও তার পরিবার, মেহেরপুরে আবদুস সালাম ও তার পরিবার, বাগেরহাটে মীর শওকত আলী বাদশা ও তার পরিবার।
তবে ৬৪টি জেলার মধ্যে রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়িতে কোনো কর বাহাদুর পরিবার খুঁজে পাওয়া যায়নি।