চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

কর প্রদানের এমন উৎসবমুখর পরিবেশ বিরল

সপ্তাহব্যাপী আয়কর মেলা আজ শেষ হয়েছে। রাজধানীসহ সারাদেশের করদাতারা বেশ উৎসাহের সঙ্গে মেলায় এসে লাইনে দাঁড়িয়ে আয়কর রিটার্ন জমা ও কর পরিশোধ করেছেন। মেলা শেষ হলেও ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত করাঞ্চলে আয়কর রিটার্ন জমা দেয়া যাবে বলে জানিয়েছে এনবিআর।

বুধবার পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কর মেলা থেকে মেলায় রেকর্ড সংখ্যক ৬ লাখ ৫৫ হাজার রিটার্ন জমা পড়েছে, কর আহরিত হয়েছে ২ হাজার ৬১৪ কোটি। নতুন বহু করদাতা এই মেলায় তাদের নাম লিখিয়েছেন।সর্বশেষ হিসেব হয়তো শীঘ্রই প্রকাশ করবে এনবিআর। সবমিলিয়ে কর প্রদানের জন্য দেশের জনগণের উপস্থিতি ও আগ্রহ খুবই ইতিবাচক একটি দিক।

বুধবার মেলার শেষ দিনে মেলায় উপস্থিত হয়েছিলেন এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। এনবিআর চেয়্যারম্যান বলেন, সামর্থ্যবানদের আয়কর প্রদান করা নৈতিক দায়িত্ব। দেশের উন্নয়নে বেশিরভাগই অভ্যন্তরীণ সম্পদ ব্যবহার করা হয়। আমাদের ডিজিপি প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশের উপরে, এটা ধরে রাখতে হলে কর ডিজিপি বাড়াতে হবে। বর্তমানে আমাদের কর জিডিপি ১০ থেকে ১১ শতাংশ। ২০২৫ সালে কর জিডিপি ১৫ শতাংশ এবং ২০৩০ সালে ২০ শতাংশ নিয়ে যেতে চাই। এজন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।

আয়কর প্রদান প্রক্রিয়া নিয়ে এবং কর কর্মকর্তাদের বিষয়ে দেশের সাধারণ ব্যবসায়ী ও করদাতাদের মধ্যে একটি নেতিবাচক ধারণা ছিল অতীতে। করমেলা আয়োজনের এই অভিনব পরিকল্পনার ফলে সেই ধারণা ধীরে ধীরে দূর হয়ে যাচ্ছে বলে দৃশ্যমান হচ্ছে। কর দেবার জন্য লাইনে দাঁড়ানোর এই প্রচেষ্টা বিশ্বের আরকোথাও দেখা যায় কিনা সন্দেহ। সরকার এই উদ্যোগের জন্য সাধুবাদ পেতেই পারে। তবে সারাবছর যেনো কর দেবার বিষয়ে করদাতারা যেনো কোনো হয়রানি বা অপচেষ্টার শিকার না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখা জরুরি বলে আমরা মনে করছি।

এনবিআর চেয়ারম্যান অবশ্য সে বিষয়েও কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, করদাতারা আয়কর মেলাকে নির্ভরযোগ্য বলে মনে করেন। আপনারা আমাদের কর অফিসেও এমন নির্ভরযোগ্যভাবে ও বিশ্বস্ততার সঙ্গে কর দিতে পারবেন। যারা হয়রানি করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে

কর প্রদান ও গ্রহণ প্রক্রিয়া দেশের উন্নয়ন ও স্বাভাবিক প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডের জন্য খুবই জরুরি। কর্মক্ষম অবস্থায় এবং ব্যবসা করে আয় করে কর প্রদান করলেও কোনো করদাতা বা ব্যবসায়ী তার দু:সময়ে বা শেষ বয়সে রাষ্ট্র থেকে কোনো রিটার্ন বা সহায়তা পাবে কিনা, সে বিষয়ে কোনো পরিষ্কার নীতিমালা না থাকার পরেও দেশের মানুষ আগ্রহ ভরে কর প্রদান করে যাচ্ছে। বিভিন্ন দেশে করদাতারা শেষ বয়সে রাষ্ট্র থেকে বিশেষ বিভিন্ন ভাতা ও সহায়তা পেয়ে থাকেন, করদাতা জনগণ/ব্যবসায়ী কর প্রদানের বিপরীতে ভবিষ্যতে রাষ্ট্র থেকে কিছু পাবেন, এমন নীতিমালা করা যেতে পারে।

কর প্রদান কর এই ধারা ইতিবাচক ভাবে অব্যাহত থাকুক, এটা আমাদের প্রত্যাশা। তবে সেইসঙ্গে এটাও খেয়াল রাখতে হবে যে, জনগনের কাছ থেকে সংগ্রহ করা কর যেনো সঠিক ও কার্যকরভাবে জনগণের কল্যাণে খরচ হয়। আমাদের আশাবাদ, সংশ্লিষ্ট ও দায়িত্ববান সকলে এ বিষয়ে উদ্যোগী হবেন।