করোনা ভাইরাসের ব্যক্তিগত ঝুঁকি নির্ণয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সচেতনতা সফটওয়্যার ও তরুণ বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবনী পাঁচটি নতুন প্ল্যাটফর্ম নিয়ে এসেছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।
সোমবার দুপুরে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন: বর্তমান অবস্থা এবং করোনা পরবর্তী সময়ে আইসিটি কিভাবে ভূমিকা রাখতে পারে তার প্রচেষ্টা হিসেবে এই বিষয়গুলো নিয়ে আসছে আমাদের স্টার্টআপ বন্ধুরা। আশা করি প্রযুক্তির মাধ্যমে বর্তমান ও করোনা পরবর্তী সময়ে প্রযুক্তিগত সমাধান দিতে এই প্ল্যাটফর্মগুলো কাজ করবে।
জরুরি সরবারাহ ক্ষেত্রে অনলাইনভিত্তিক সেবাগুলো চালানো যাবে কিনা? এমন এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন: অনলাইনভিত্তিক যে সেবা মাধ্যমগুলো আছে তারা তাদের একটি তালিকা দিলে তা কমিশনারের মাধ্যমে অনুমতি দেয়া হবে।
তবে অফিস খোলা রাখা হবে কিনা সেটা তাদের ব্যাপার। তারা তাদের প্রয়োজনীয় সহযোগীতার জন্য যোগাযোগ করা হলে তা পূরণ করা হবে।
লাইভ করোনা টেস্ট
মোবাইলের মাধ্যমে করোনা টেস্ট এর জন্য এই ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করা হয়েছে। সাধারণ কিছু তথ্যের মাধ্যমে বলে দিতে পারবে করোনার ঝুঁকির মাত্রা। সরকারসহ ডাক্তারকে এই অ্যাপ্লিকেশন নানা ভাবে সহায়তা করতে পারবে। ওই অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্যর মাধ্যমে সরকার পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিতে ভূমিকা রাখবে। অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে কতজন আইসোলেশন বা কোয়ারেন্টাইন আছে তা বের করা খুব সহজ হবে বলে জানানো হয়।
করোনা ভাইরাসের সরকারের হালনাগাদ সকল তথ্য এবং প্রধানমন্ত্রীর দেয়া সকল নির্দেশনা নিয়ে একটি পেজ থাকবে। সেখানে কুইজও থাকবে। সেখানে গিয়ে সবাই কুইজে অংশ গ্রহণ করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।
করোনা অ্যাওয়ারনেস বোট
করোনা মোকাবেলায় আরেকটি প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে করোনা অ্যাওয়ারনেস বোট। আইসিটি ডিভিশনের পেজে করোনা অ্যাওয়ারনেস বোটটি ব্যবহার করা হয়েছে। এই প্লাটফর্মে করোনা কী, করোনার লক্ষণ কী, করোনায় নেয়ায় সরকারের নানা পদক্ষেপ, করোনা থেকে মুক্তি পেতে করণীয় বিষয়, প্রয়োজনীয় কেন্দ্রের নাম্বার যোগ করা হয়েছে এই প্লাটফর্মে। তবে এটি পরবর্তীতে প্রয়োজন অনুযায়ী এটি পরিবর্তন করা হবে। এটি বর্তমানে বাংলায় করা হয়েছে তবে দুই একদিনের মধ্যে তা ইংরেজি ভাষায় নিয়ে আসা হবে বলে জানানো হয়। করোনা বিষয়ে আন্তর্জাতিক সকল ডাটাও এখানে সংযোজন করা হয়েছে।
কল ফর ন্যাশন
নতুন নতুন আইডিয়া নিয়ে যারা আসছেন তাদের জন্য তৈরি করা হয়েছে ন্যাশনাল কল নামে একটি ওয়েব সাইট। এখানে সবাই আবেদন করতে পারবেন।
এই প্ল্যাটফর্মটি আন্তর্জাতিকভাবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যেকোনো দুর্যোগকালীন সময়ে প্ল্যাটফর্মটি কাজ করে। কেউ মাস্ক তৈরি করছে, কেউ দরিদ্র্য মানুষকে খাওয়াচ্ছেন। আমাদের কাজ হলো তাদেরকে নিয়ে ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা এবং তাদেরকে একটি প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসা। যারা নতুন নতুন উদ্ভাবনী শক্তি নিয়ে এগিয়ে এসেছেন তাদের মধ্যে থেকে দশজনকে সহায়তা করা হবে এই প্ল্যাটফর্মে। এছাড়া পরবর্তী যেকোনো দুর্যোগকালীন সময় এই তথ্য গুলো কাজে লাগানো হবে।
প্রবাসী হেল্প লাইন ডট কম
করোনা নিয়ে প্রবাসীদের তথ্য দিতেই এই হেল্পলাইনটি তৈরি করা হয়েছে। বাংলাদেশের প্রবাসীরা যে দেশে অবস্থানে করছেন সেই দেশের মিশনের নাম্বার তথ্য, এবং সেই দেশের সরকারি সকল তথ্য দেয়া আছে। এই প্ল্যাটফর্মে ২১৯টি সারা এসেছে প্রবাসীদের কাছ থেকে। করোনার লক্ষণ ও প্রতিরোধ নিয়ে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ্য করা হয়েছে। কিছু প্রয়োজনীয় প্রশ্ন ও উত্তর রাখা হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্য থেকে সবচেয়ে বেশি সারা এসেছে এই প্ল্যাটফর্মে। তবে আমরা চেষ্টা করছি ডাক্তারদের সমন্বয় করে আরেকটু আপডেট করার।
চার্টাড বাংলাদেশ ডট কম
করোনা মোকাবিলায় নতুন স্টার্টআপদের তৈরি ১৭টি ইনোভেটিভ উদ্ভাবনী সংযোজন করা হয়েছে। নতুন স্টার্টআপদের তৈরি ১৭টি ইনোভেটিভ উদ্ভাবনীতে রয়েছে: শিক্ষা, কোভিড-১৯ এর এক্সরের মাধ্যমে করোনা সনাক্ত করা, করোনা পরর্বতী ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারদের সহায়তা, রোবটের মাধ্যমে করোনা আক্রান্তদের সহায়তা করা, অনলাইনে নানা প্রয়োজনীয় বিষয় ডেলিভারি, হোম ডায়াগনিস্টিকের জন্য মোবাইল অ্যাপ, মেডিক্যাল ইকুয়েপমেন্ট এর অভাব সনাক্ত করণ, নিরাপদ খাদ্য বিতরণ, বাসায় থাকাদের কিভাবে কাজে লাগানো এবং করোনার সময় বাসায় অবস্থান করাদের মানসিক সহায়তা প্রদান।