বৈশ্বিক করোনা মহামারিতে বেদে জনগোষ্ঠীদের পাশে দাঁড়িয়েছে উত্তরণ ফাউন্ডেশন। মুন্সীগঞ্জ জেলায় অন্তত এক হাজার বেদে সদস্যদের ত্রাণ বিতরণ করেছে উত্তরণ ফাউন্ডেশন। করোনা মহামারি ঠেকাতে চলমান লকডাউনে থাকা এই জনগোষ্ঠী আর্থিকভাবে অসচ্ছল হয়ে পড়ে। পবিত্র মাহে রমজানে বেদে সদস্যদের সাময়িক আর্থিক অসচ্ছলতা দূরীকরণে এই কর্মসূচি গ্রহণ করে উত্তরণ ফাউন্ডেশন।
মুন্সীগঞ্জ জেলার খড়িয়া-২৭২ জন, গোয়ালিমান্ডা-৩৭১ জন, কনেকশর- ২২০ জন এবং মুন্সীগঞ্জ সদরের ১৩৭ জন সহ মোট ১০০০ জনের মাঝে এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
কর্মসূচিটির সার্বিক পরিচালনা ও নির্দেশনায় ছিলেন উত্তরণ ফাউন্ডেশন এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি জনাব হাবিবুর রহমান (বিপিএমবার)। এই কর্মসূচি পরিচালনাকালীন সময়ে উপস্থিত ছিলেন মুন্সিগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার জনাব মোঃ আব্দুল মোমেন (পিপিএম বার)।
এই ত্রাণ সেবা গ্রহণ করার পর বেদে সদস্যদের প্রতিক্রিয়া ছিল লক্ষণীয়। সোহাগী নামের একজন বেদে সদস্য জানান, এই লকডাউনে আমাদের স্বাভাবিক জীবনমান ও আয়ের ক্ষেত্র অনেক সীমিত হয়ে আসছে। এমন এক দুর্দিনে ডিআইজি হাবিবুর রহমান স্যার আমাদের পাশে ফেরেশতার মতো হয়ে দাঁড়িয়েছেন। ফলে আমরা অন্তত এই রমজান মাস এবং ঈদুল ফিতরে কিছুটা হলেও স্বস্তিতে থাকতে পারবো।
ইতিপূর্বে উত্তরণ ফাউন্ডেশন হিজড়া ও বেদে জনগোষ্ঠীকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করে। তবে উত্তরণ ফাউন্ডেশন এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ডিআইজি হাবিবুর রহমান বিপিএম(বার), পিপিএম(বার) এর সার্বিক প্রচেষ্টা ও বর্তমান সরকারের নানামুখী উদ্যোগে বেদে জনগোষ্ঠী আজ বৈষম্যমুক্ত হয়ে সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথে অগ্রসরমান। তারই ধারাবাহিকতায় এভাবে মানবিক উন্নয়ন এবং মানবতার পাশে থাকছে উত্তরণ ফাউন্ডেশন।
ইতিমধ্যে উত্তরণ ফাউন্ডেশন সাভারে বেদে পল্লী ও হিজড়া গোষ্ঠীর সমাজ ব্যবস্থা উন্নয়ন থেকে শুরু করে স্কুল, কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার, গাড়ি চালনা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও বুটিক হাউসসহ নানা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার মাধ্যমে তাদের আত্ম কর্মসংস্থানের পাশাপাশি বেদে পল্লীর অভিশপ্ত বাল্য বিবাহ রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এছাড়াও দৌলতদিয়া পতিতাপল্লীতে বেড়ে ওঠা শিশুদের জন্য একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এবং সুবিধা বঞ্চিত ও অবহেলিত পিছিয়ে পড়া হিজড়া জনগোষ্ঠীর জীবন-মান উন্নয়নের লক্ষ্যে ‘উত্তরণ কর্ম-সংস্থান প্রশিক্ষণ’ কর্মসূচি চালু করা হয় এবং হিজড়া সম্প্রদায়ের জীবনমান উত্তরণ, তাদের পূনর্বাসন ও মানুষ হিসেবে তাদের সামাজিক মর্যাদা সমুন্নত করতে সাড়া জাগানো বেশ কিছু পদক্ষেপ গৃহীত হয়। এরমধ্যে সারা বাংলাদেশের হিজরা জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের জন্য সাতটি বিউটি পার্লার ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। তিনটি গাভীর খামার, দুটি গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে হিজড়া জনগোষ্ঠীর জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে।
তাছাড়া রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া পূর্ব পাড়া এলাকায় উত্তোরণ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ১৬০০ অসহায় নারী ও দুস্থদের মাঝে ঈদ উপলক্ষে বস্ত্র বিতরণ করেছে গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ।
সোমবার পুলিশ ও অসহায় নারী ঐক্য সংগঠনের সার্বিক সহযোগিতায় দৌলতদিয়া পূর্ব পাড়া এলাকায় পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে অসহায় নারী ও দুস্থদের মাঝে ১৪০০ শাড়ি ও ২০০ লুঙ্গি বিতরণ করা হয়।