গামালেই ইনস্টিটিউট অব এপিডেমোলজি অ্যান্ড মাইক্রোবায়োলজি’র উদ্ভাবিত করোনা ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সফলভাবে শেষ করার দাবি করেছে রাশিয়ার সেচেনভ ফার্স্ট মস্কো স্টেট মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এটিই বিশ্বে প্রথম কোনও করোনা ভ্যাকসিনের সফল ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল। রুশ সংবাদমাধ্যম স্পুটনিকের বরাত দিয়ে এনডিটিভি এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, রাশিয়ার গামালেই ইনস্টিটিউট অব এপিডেমোলজি অ্যান্ড মাইক্রোবায়োলজি-এর উদ্ভাবিত করোনা ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল ১৮ জুন শুরু হয়েছিল। পরীক্ষাটি পরিচালনা করে রাশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সেচেনভ ফার্স্ট মস্কো স্টেট মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি।
সেচেনভ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল প্যারাসাইটোলজি, ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ভেক্টর বর্ন ডিজিসেস-এর পরিচালক অ্যালেক্সান্দ্রা লুকাসেভ জানান, ভ্যাকসিন পরীক্ষার এই পর্যায়ের মূল লক্ষ্য ছিল মানব দেহে তা কতটা নিরাপদ তা পর্যবেক্ষণ করা। এটা সফলভাবে শেষ হয়েছে।
লুকাসেভ আরও জানান, এই ভ্যাকসিন সম্পূর্ণ নিরাপদ। বর্তমানে যেসব ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হচ্ছে সেগুলোর সঙ্গে এই করোনা ভ্যাকসিনের সামঞ্জস্য আছে। ভ্যাকসিনটির উদ্ভাবন এগিয়ে নিতে ইতোমধ্যে উদ্ভাবকরা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে, ভাইরাসের কারণে মহামারি পরিস্থিতির জটিলতা ও সম্ভাব্য উৎপাদন বাড়ানো।
রাশিয়ার ইনস্টিটিউট অব ট্রান্সন্যাশনাল মেডিসিন অ্যান্ড বায়োটেকনোলজির পরিচালক ভাদিম তারাসোভ বলেন, সেচেনভ ইউনিভার্সিটি বিশ্বে প্রথমবারের মতো স্বেচ্ছাসেবকদের ওপর করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনের পরীক্ষা সফলভাবে সম্পন্ন করেছে।
তারাসোভ জানিয়েছেন, ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারী স্বেচ্ছাসেবকদের প্রথম দলকে বুধবার ও দ্বিতীয় দলকে ২০ জুলাই হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে।
তারসোভ বলেন, মহামারি পরিস্থিতি সেচেনভ ইউনিভার্সিটি শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করেছে তা নয়, তারা বৈজ্ঞানিক ও কারিগরি গবেষণা কেন্দ্র হিসেবে কাজ করেছে। ফলে তারা ওষুধের মতো গুরুত্বপূর্ণ ও জটিল কিছু উদ্ভাবনের প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পেরেছে।
রুশ বার্তা সংস্থা তাস এর আগে জানিয়েছিল, ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অংশ হিসেবে ১৮ জুন ১৮ জন এবং ২৩ জুন ২০ জন স্বেচ্ছাসেবীর দেহে তা প্রয়োগ করা হয়। এই পরীক্ষার ফলাফল আগস্টে প্রকাশিত হতে পারে। এরপর দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তা মূল্যায়ন করে সিদ্ধান্ত নেবে ভ্যাকসিনটি ব্যবহারের বিষয়ে।
করোনাভাইরাসে বিশ্বের ১ কোটি ২০ লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫ লাখ ৬৯ হাজার মানুষের। করোনার কোনও চিকিৎসা আবিষ্কৃত না হওয়া ভ্যাকসিনকেই মহামারি মোকাবিলায় সবচেয়ে কার্যকর উপায় বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। বিশ্বে শতাধিক ভ্যাকসিন উদ্ভাবনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। তবে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে অল্প কয়েকটি দেশ পৌঁছাতে পেরেছে।