চীনের মরণব্যাধি করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার গতি খুবই দ্রুত বলে সতর্ক করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। চান্দ্র নববর্ষ উৎসব ও সরকারি ছুটি বিষয়ে বিশেষ সরকারি বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
চীন ‘ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে’ বলে বৈঠকে উল্লেখ করেন তিনি।
বৈঠকে দেশটিতে সর্বোচ্চ ভ্রমণ সতর্কতা ও চিকিৎসা সেবা বাড়ানোসহ নেয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ। বাতিল করা হয়েছে চান্দ্রবর্ষ উদযাপনের সব আয়োজন।
প্রাণঘাতী এ রোগে চীনে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দাড়িয়েছে ৪২ জনে। আক্রান্ত হয়েছে অন্তত দেড় হাজার মানুষ।
চীন ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে ভাইরাসটি। চীনের ইউহানে প্রথম ধরার পর থেকে এ পর্যন্ত মালয়েশিয়া, জাপান, সিঙ্গাপুর, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স ও সৌদি আরবসহ ১২টি দেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে।
ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে পাশ্ববর্তী দেশ নেপাল। ঝুঁকিতে থাকা প্রতিবেশী দেশ ভারতে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সেখানে ইতোমধ্যে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ১১ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের একদল গবেষক আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, চীন সম্ভবত ভাইরাসটির সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না।
তবে চীনের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। আক্রান্ত বেশকিছু শহরের সঙ্গে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। রোববার থেকে ভাইরাস সংক্রমণের উৎপত্তিস্থল ইউহান থেকে অন্যান্য স্থানে ব্যক্তিগত যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়েছে।
নতুন ‘মূষিকবর্ষ’ উপলক্ষে উৎসবের আয়োজন চীনের বিভিন্ন শহরে বাতিল করে দেয়া হলেও ইতোমধ্যে সেখানে দেশিবিদেশি পর্যটকরা রয়েছেন। এজন্য বিভিন্ন স্থানে তাদের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হচ্ছে এবং জ্বরসহ রোগের অন্যান্য লক্ষণ রয়েছে কিনা তা যাচাই করে দেখা হচ্ছে।
চীনের হুবেই প্রদেশে ইতোমধ্যে বিশেষজ্ঞ সামরিক মেডিক্যাল টিম পাঠানো হয়েছে। এ প্রদেশেই ইউহান শহরটি অবস্থিত।
চীনের অন্যতম জাতীয় দৈনিক পিপল’স ডেইলি জানিয়েছে, করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য ইতোমধ্যে এক হাজার শয্যাবিশিষ্ট জরুরি হাসপাতালের নির্মাণকাজ চলছে। দ্বিতীয় আরেকটি একই ধরনের হাসপাতাল নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে, যেটিতে একসঙ্গে ১৩শ’ জনের চিকিৎসা করা সম্ভব হবে।
সাধারণ জ্বর-কাশি উপসর্গ দেখা দিলেও নতুন আতঙ্ক করোনা ভাইরাস ভয়াবহ পরিণতির দিকে নিয়ে যায় আক্রান্তকে। চলমান পরিস্থিতিতে চীনে দেশটিতে বসবাসরত বা ভ্রমণরত বাংলাদেশিদের জন্য হটলাইন চালু করা হয়েছে। হটলাইনের নম্বর: ৮৬-১৭৮০১১১৬০০৫।