প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে বিপর্যন্ত ইতালিতে মানুষের চলাচলে কঠোর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। করোনা আক্রান্ত কোনো ব্যক্তি আইন লংঘন করলে তাকে ১ থেকে ৫ বছরের জেলে রাখার বিধান কার্যকর হয়েছে।
স্থানীয় সময় বুধবার থেকে নতুন নিয়মে জরিমানা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০০ ইউরো থেকে ৩ হাজার ইউরো। গাড়িসহ আইন লংঘনকারী ক্ষেত্রে শাস্তির বিধান তিনগুণ বৃদ্ধি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার মন্ত্রী পর্যায়ে দীর্ঘ আলোচনার পর ইতালির প্রধানমন্ত্রী জুসেপ্পে কন্তে সরকারের এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
সে সময় তিনি আরও বলেন: ‘যারা সরকার ঘোষিত আইন অমান্য করবে, তারা উচ্চ জরিমানার ঝুঁকিতে থাকবে। ইতালিয়ানরা একটি কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি। করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে। জনগণের স্বাভাবিক চলাচল নিয়ন্ত্রণ করায় অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। কিন্তু তা সবার কল্যাণের জন্য।’
‘‘কেবল বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা সীমাবদ্ধ নয়, বাইরে গিয়ে জাতীয় অঞ্চলে প্রবেশের ক্ষেত্রেও সীমাবদ্ধতা রয়েছে।’’
এই জরিমানা নির্ধারণ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে দীর্ঘ আলোচনা হয় এবং সর্বনিম্ন জরিমানা নির্ধারণ করা হয় ৪০০ ইউরো, সর্বোচ্চ ৩ হাজার ইউরো।
এর আগে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হলে ২০৬ ইউরো জরিমানার বিধান ছিল। গাড়িসহ কোনো ব্যক্তি জাতীয় অঞ্চল থেকে বিভাগীয় অঞ্চলে যাতায়েতের ক্ষেত্রে ঘোষিত আইনে তিনগুণ শাস্তি বৃদ্ধি করা হয়েছে।
সরকারের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সরকার ঘোষিত বিধান কঠোরভাবে বুধবার থেকেই তদারকি করছে। আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে প্রয়োজনে সেনাবাহিনী ব্যবহারের সম্ভাবনার কথাও বলা হয়েছে।
সরকারের এ বিধি-নিষেধ আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত চলবে এই আশংকা সরিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী জুসেপ্প কন্তে বলেন: ‘এটি একেবারেই সত্য নয়। ৬ মাসের জাতীয় জরুরি অবস্থা ৩১ জুলাই পর্যন্ত চলবে না। আশা করি খুব শিগগিরই পরিস্থিতির উন্নতি হবে।’
মহামারির চেয়েও ভয়ংকর রূপ নিয়ে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের উহানে প্রথম শনাক্ত হয়।
বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সারা বিশ্বে প্রায় পৌনে ৫ লাখ মানুষ এতে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মারা গেছে ২১ হাজারেও বেশি মানুষ। আর চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন লক্ষাধিক ব্যক্তি।