করোনার প্রভাবে সবকিছু বন্ধ। এমনকি বিনোদন অঙ্গনও করোনার আঘাতে স্থবির। পরিচালক, শিল্পীর সঙ্গে প্রোডাকশনে যারা শুটিংয়ের সরঞ্জাম যোগান দিতে ব্যস্ত থাকতেন, তারা এখন দিশেহারা! করোনায় তাদের কাজ বন্ধ। রোজগার নেই। তাই তাদের দিন কাটছে কষ্টে।
বাংলাদেশ টেলিভিশন মিডিয়া প্রোডাকশন ম্যানেজার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও চলচ্চিত্র উৎপাদক ব্যবস্থাপক সমিতির সদস্য মো. সাদেক চ্যানেল আই অনলাইনের সঙ্গে আলাপে বলেন, এখন শুটিং নেই। প্রোডাকশনের যারা কাজ করে অনেকেই বাড়ি চলে গেছে। যারা ঢাকায় আছে অনেকের কাছে টাকা পায়, সেগুলো আদায়ের চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, অনেকে পাওনা টাকা পাচ্ছে, আবার অনেকেই ফোন ধরছে না। আমি নিজেই পাঁচ জায়গায় বকেয়া পাব। এরমধ্যে একজন টাকা দিয়েছে। আমার কাছেও কিছু ‘প্রোডাকশন বয়’ টাকা পায়। আমিও যতটুকু পারছি পাওনা পরিশোধে তাদের চেষ্টা করছি। এটা নিয়েই আপাতত কেউ কেউ বাড়ি চলে যাচ্ছে। পরে পাঠিয়ে দেব জানাচ্ছি।
মো. সাদেকের সঙ্গে আলাপ করলে তিনি জানান, টেলিভিশন মিডিয়ায় প্রোডাকশন ম্যানেজার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য ৩২৫ জন এবং চলচ্চিত্র উৎপাদক ব্যবস্থাপক সমিতির সদস্য ১৫৬ জন।
সাদেক বলেন, টেলিভিশন মিডিয়ায় কাজ বেশি থাকে। সারা মাসই নাটক-টিভিসির শুটিং হয়। কিন্তু সিনেমায় কাজ কম হয়। কারণ, এখন সিনেমা হচ্ছে খুবই কম। তবে করোনার মধ্যে এখন কোথাও কোনো কাজ হচ্ছে না। প্রোডাকশনের বেশীরভাগ মানুষের দিন চলে ‘হ্যান্ড টু মাউথ’ (দিন আনা দিন খাওয়া)। শুটিং যেতেহু বন্ধ তাই কেউই ভালো নেই। এরমধ্যে যাদের আর্থিক অবস্থা বেশি খারাপ অনেকেই গ্রামে চলে গেছেন।
প্রোডাকশনে যারা কাজ করে তারা তূলনামূলক অসচ্ছল। এজন্য তাদের নিয়ে ভাবছে চলচ্চিত্রের ‘মাদার অর্জানাইজেশন’ প্রযোজক পরিবেশক সমিতি।
সংগঠনটির সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, প্রযোজক পরিবেশক সমিতির সঙ্গে আরও দুএকটা সংগঠন মিলে প্রোডাকশনে যারা কাজ করছে তাদের জন্য ভাবা হচ্ছে। শিগগির এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব।
শুধু বাংলাদেশে নয়, একই অবস্থা বিরাজ করছে সারা পৃথিবীর সিনেমা অঙ্গনে। করোনার কারণে শুটিং বন্ধ থাকায় অর্থনৈতিক সংকটে পড়ছে হলিউড ও বলিউডের প্রোডাকশনে যারা দৈনিক বেতন কিংবা প্রজেক্ট হিসেবে কাজ করেন। তবে এরইমধ্যে সেই সব অস্বচ্ছল মানুষের জন্য অর্থ সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে পরিচালক ও প্রযোজকরা।