চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

করোনার ভয়াবহতা নিয়েও গান লিখেছিলেন আলাউদ্দিন আলী

দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ কালজয়ী অসংখ্য গানের স্রষ্ঠা সুরকার, সংগীত পরিচালক আলাউদ্দিন আলী। ব্যাংকক থেকে উন্নত চিকিৎসা শেষে গেল জানুয়ারিতে দেশে ফিরেছেন। এরপর থেকে শুয়েই কাটছিলো তার দিন রাত। বাইরের পৃথিবী সম্পর্কে খুব একটা ধারণা ছিলো না। এরমধ্যে মার্চে দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হয়। বিষয়টি নিয়ে তার ধারণা না থাকলেও শুনে শুনেই এর ভয়াবহতা ও এই মরণব্যাধী ভাইরাস থেকে বাঁচার আকুতি জানিয়ে গান লিখেছিলেন তিনি।

গেল জুন মাসে চ্যানেল আই অনলাইনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়ে ছিলেন তার সহধর্মিনী ও শিল্পী ফারজানা আলী। সেসময় আলাউদ্দিন আলীকে নিয়ে তিনি বলেন, বিশ্বময় বর্তমান করোনা পরিস্থিতি সম্পর্কে তার (আলাউদ্দিন আলী) ধারণা নেই। কিন্তু আমি তাকে বুঝিয়ে বলেছি যে, বিশ্বব্যাপী একটা মহামারী চলছে। শুধু বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীতেই এটি ছড়িয়ে গেছে। অসংখ্য মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে, প্রতিদিন মারা যাচ্ছে। অনেক কিংবদন্তী মানুষকেও কেড়ে নিয়েছে করোনাভাইরাস। এটি শোনার পর একদিন দুপুরে তিনি গান লিখতে বসলেন।

সেদিন ছিলো ১৮ মে। এদিন দুপুরে আলাউদ্দিন আলী স্ত্রী ফারজানা আলীকে বললেন, করোনা নিয়ে তিনি একটি গানের কথা সাজিয়েছেন। এটা শুনেই ফারজানা আলী লিখতে বসে যান।

সেই গানটির মুখটা এরকম: ‘‘ফিরে যাও শান্তি দাও, আমরা বাঁচতে চাই/ তোমার কারণে বন্দি আমরা, এইবার মুক্তি চাই। মুক্ত আকাশ মুক্ত বাতাস, আমাদের খুব প্রিয়/ অনেক হয়েছে এবার তুমি/ মুক্তি এনে দিও। জ্ঞানী-গুণী হারিয়েছি আমরা এবার তুমি থামো/ বাঁচার অধিকার আছে সবার, এ কথাটি মানো।’’

শুধু করোনা নিয়েই নয়, রোমান্টিক ধাঁচের গান সুর ও লেখায় অভ্যস্ত আলাউদ্দিন আলী অসুস্থ থাকা অবস্থায়ও তেমন একটি গান লিখেন। সেদিন ছিলো ৪ জুন। গানটি নিয়ে ফারজানা আলী বলেন, সেদিন বৃষ্টি হচ্ছিলো। এই মুডই সেই গানটিতে তিনি রেখেছেন। গানের মুখ এরকম: ‘‘ঝিরে ঝিরি বৃষ্টি ঝরে, মেঘ বয়ে যায়/ হারানো প্রিয়তমা মন খুঁজে তোমায়। কোনো এক বৃষ্টি রাতে, হারিয়েছিলে তুমি/ সেই থেকে একা হয়ে আজও আছি আমি।’’

শুধু গান লিখেই নয়, গানটি কে গাইতে পারে এমন সম্ভাব্য শিল্পীর নামও মনে মনে বলে দিতেন আলাউদ্দিন আলী। একটি গানের সমস্ত থিমই তার মাথায় সারাক্ষণ ঘুরপাক খেত। অসুস্থতার জন্য গানের সাথে কিছুটা বিচ্ছেদ ঘটলেও তার প্রতিটি ভোর হতো গানের স্মৃতি নিয়ে।